আদালতের নির্দেশে দাফনের ২ মাস পর এক নারীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করেছে সিআইডি। বুধবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মো. হাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে সোনারগাঁওয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা এলাকার স্থানীয় কবরস্থান থেকে মমতাজ বেগম (৫৮) নামে এক নারীর লাশ উত্তোলন করা হয়।
জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল রাতের কোন এক সময় মৃত্যুবরণ করে ঘরের মেঝেতে পরে থাকতে দেখে ১৯ এপ্রিল সকালে প্রতিবেশী আত্নীয় স্বজনকে খবর দেয়। ওই মৃত্যুর ঘটনায় মমতাজ বেগমের শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন থাকায় তার মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নির সন্দেহ হলে বিষয়টি রহস্যের সৃষ্টি হয়। তবে মমতাজ বেগমের বাবা আব্দুল খালেক প্রধান ও তার পরিবারের দাবি তিনি স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন। এ মৃত্যু রহস্যজনক হওয়ায় নিহতের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি বাদি হয়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে ২৭ এপ্রিল পিটিশন মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, "ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ আদালতের নির্দেশে তদন্তের স্বার্থে লাশ উত্তোলন করতে আসলে আমরা মমতাজ বেগমের লাশ উত্তোলনে সাহায্য করেছি"।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, বাবার বাড়ির পরিবার ও মমতাজ বেগমের মধ্যে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে প্রতিদিন কোন না কোন ঝগড়া লেগে থাকতো। এছাড়াও মমতাজ বেগমমের টাকা ও ও তার মেয়েকে দীর্ঘ সময় পর জানানো হয়। মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তার মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি ঘটনাস্থলে গিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন পায় ও ডান চোখ রক্তাক্ত ফুলা ছিল। কিন্তু খালেক প্রধানের পরিবার এ মৃত্যুকে স্ট্রোক বলে দাবি করেন। এসময় শরীরে চিহ্ন থাকায় তার মেয়ে মায়ের ময়না তদন্ত দাবি করেন। এক পর্যায়ে মমতাজ বেগমের বাবার বাড়ির লোকজন তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তড়িগড়ি করে লাশ দাফন করে।
নিহতের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি বলেন, "আমার মাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া তার ঘরে থাকা টাকা পয়সা স্বর্ণলংকার ও দলিলপত্রের কোন প্রকার সন্ধান না পাইনি"।
নারায়ণগঞ্জ সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আদালতের নির্দেশের মমতাজ বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। রহস্য উদঘাটনের জন্য লাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম