বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানকে কেউ যদি তালেবানকাণ্ড বলে অভিহিত করেন তবে অনেকেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠবেন। কারণ এ দেশে তালেবান শব্দটি একসময় ট্যাগ করা হতো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের দিকে। জুলাই গণ অভ্যুত্থানকে যারা এখনো বুকে ধারণ করেন, এমন অভিধায় তাদেরও হয়তো আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু ‘তালেবান’ শব্দটির অর্থ জানলে সবারই খামোশ হয়ে যাওয়ার কথা। পশতুন ভাষায় তালেবান শব্দের অর্থ ছাত্র। এটি অতি অবশ্যই আপত্তিকর কিছু নয়। ছাত্র ও তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ অভ্যুত্থানে ২০২২ সালের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশ ও এ বছরের সেপ্টেম্বরে নেপালে সরকার পতন ঘটেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ছাত্র বা তালেবানের নেতৃত্বে সরকার পতনের ঘটনা প্রথম সংঘটিত হয় আফগানিস্তানে। তবে তা শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের মতো গণ অভ্যুত্থানে নয়, বরং সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে।
আফগানিস্তান ছিল শত শত বছর ধরে রাজতান্ত্রিক দেশ। আমানউল্লাহ খান ছিলেন আফগানিস্তানের বাদশাহ। ভারতবর্ষে তখন ব্রিটিশ শাসন। আফগানিস্তানকে তারা দেখত সন্দেহের চোখে। ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আফগানদের সম্পর্ক ব্রিটিশদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তিনটি যুদ্ধে লিপ্ত হয় তারা। সর্বশেষ যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনী প্রথম দিকে সাফল্য দেখালেও শেষ পর্যন্ত আফগানদের সাঁড়াশি আক্রমণে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
বাদশাহ আমানউল্লাহ পাশের দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে গড়ে তোলেন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। শাসক হিসেবে তিনি ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। এ প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি দেশকে আধুনিক করার উদ্যোগ নেন। এ মুহূর্তে আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে রক্ষণশীল মুসলিম দেশ। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্য, আফগানিস্তানে আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয় আজ থেকে শত বছর আগে। কামাল পাশার নেতৃত্বে তুরস্কে আধুনিকীকরণের প্রায় একই সময়ে। আমানউল্লাহ আফগানিস্তানে ছেলে ও মেয়েদের জন্য ইউরোপীয় ধাঁচের নতুন স্কুল খোলার ব্যবস্থা নেন। নারীদের বোরকার মধ্যে বন্দি থাকার সনাতন নিয়ম থেকে মুক্ত করার উদ্যোগও নেন তিনি। রানি সুরাইয়া তারজি নারীদের আধুনিকীকরণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেন। বাদশাহ আমানউল্লাহর শ্বশুর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ তারজির পরামর্শে তিনি আফগানিস্তানের জন্য আধুনিক সংবিধান প্রণয়ন করেন। যে সংবিধানে নাগরিক অধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমানউল্লাহ খানের ভারত ও ইউরোপ সফরের সময় বাহাই সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আফগানিস্তানের গোঁড়া মুসলমানরা আধুনিকীকরণের নামে তাদের বাদশাহর এসব কর্মকাণ্ডকে মেনে নিতে পারেনি। দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। ১৯২৪ সালে ‘খস্তো বিদ্রোহ’-এর সম্মুখীন হন বাদশাহ আমানউল্লাহ। তবে এ বিদ্রোহ তিনি দমন করতেও সক্ষম হন।
আজকের রাশিয়া বা সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আমানউল্লাহর আস্থার সম্পর্ক ব্রিটিশদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। আমানউল্লাহ খান সেই শত বছর আগে সোভিয়েত বিমান নিয়ে সীমিত আকারের হলেও আফগান বিমানবাহিনী গঠন করেন। তুরস্ক ও ইরান বাদে অন্য কোনো মুসলিম দেশের ওই সময় বিমানবাহিনী ছিল না। ১৯২৭ সালের শেষ দিকে বাদশাহ আমানউল্লাহ ইউরোপ সফরে যান। বাদশাহ ও রানি করাচি থেকে বিমানে করে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রাপথে তাঁরা কায়রোতে মিসরের বাদশাহ প্রথম ফুয়াদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইউরোপের ইতালি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানি, ব্রিটেন, পোল্যান্ড সফর করে এসব দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৯২৮ সালের ২ মে তাঁরা সোভিয়েত ইউনিয়নে যান।
ইউরোপ সফরের সময় আফগানিস্তানে আমানউল্লাহ শাসনের বিরোধিতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে রানি সুরাইয়া তারজির ইউরোপীয় নারীদের মতো চলাফেরা ভালো চোখে দেখেনি আফগানরা। আফগানিস্তানের মোল্লারা তাজিক জাতিগোষ্ঠীর এক ডাকাত সরদারকে বাদশাহর বিরুদ্ধে উসকে দেয়। জালালাবাদ থেকে একটি বিদ্রোহী দল রাজধানীর দিকে অগ্রসর হলে সেনাবাহিনীর অধিকাংশ সদস্য তাদের প্রতিরোধ করার বদলে দলত্যাগ করে। ১৯২৯ সালের ১৪ জানুয়ারি আমানউল্লাহ খান তাঁর ভাই ইনায়েতউল্লাহ খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ব্রিটিশ ভারতে পলায়ন করেন। এর তিন দিন পর ডাকাত সরদার হাবিবউল্লাহ কালাকানি বা বাচা-ই-সাকাও তাঁর কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেন। ডাকাত সরদার আফগানিস্তানের বাদশাহ হওয়ার পর তার বাহিনী ব্যাপক লুটপাট চালায়। জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে।
বাচা-ই-সাকাও আফগানিস্তানের বাদশাহ সেজে বসলেও দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী পশতুনদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অচিরেই লোপ পায়। ইতোমধ্যে দেশে ফিরে আসেন সাবেক সেনাপ্রধান নাদির খান। আমানউল্লাহ ক্ষমতায় থাকাকালে নাদির খানের ওপর আস্থা হারান ও তাঁকে নির্বাসনে পাঠান। ডাকাত সরদার বাচা-ই-সাকাওয়ের বাদশাহ হওয়াকে তিনি মেনে নিতে পারেননি। নাদির খান দেশে ফিরেই পশতুন ও অন্য উপজাতিদের নিয়ে শক্তিশালী বাহিনী গঠন করেন। সে বাহিনীর হাতে বাচা-ই-সাকাওর ৯ মাসের বাদশাহগিরির পতন ঘটে। ১৯২৯ সালের পয়লা নভেম্বর কাবুলে তার মৃত্যুদণ্ড ফায়ারিং স্কোয়াডে কার্যকর হয়। তার ভাইসহ আরও ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় একইভাবে। তাদের লাশ প্রকাশ্য স্থানে জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য ঝুলিয়ে রাখা হয়।
১৯২৯ সালের ১৫ অক্টোবর নাদির খান সমাজপতিদের সমর্থনে আফগান সিংহাসনে বসেন। নাদির শাহ সুশিক্ষিত ও আধুনিকমনা ছিলেন। একই সঙ্গে ছিলেন বাস্তববাদী। ক্ষমতায় এসে তিনি আমানউল্লাহ খানের অধিকাংশ সংস্কার বাতিল করেন। উপজাতি সরদারদের আস্থা অর্জনেও সক্ষম হন তিনি। ১৯৩৩ সালের ৮ নভেম্বর একটি বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় গুলি করে হত্যা করা হয় বাদশাহকে। ওই দিনই তাঁর পুত্র জহির শাহ বাদশাহ হিসেবে শপথ নেন। তিনি ছিলেন আফগান সিংহাসনের শেষ শাসক।
দুই.
১৯৭৩ সালের জুলাইয়ে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন বাদশাহ জহির শাহ। বাদশাহর চাচাতো ভাই দাউদ খান এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। তাঁকে সমর্থন দেন সেনাবাহিনীর সমাজতন্ত্রপন্থি অফিসাররা। দাউদ খান রাজতন্ত্রের অবসান ঘটান ও নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। ১৯৭৮ সালের ২৮ এপ্রিল নুর মোহাম্মদ তারাকির নেতৃত্বে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির মদতে পরিচালিত সামরিক অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট দাউদ ক্ষমতা ও প্রাণ হারান। রক্ষণশীল আফগানিস্তানে শুরু হয় সমাজতন্ত্রপন্থিদের শাসন। ক্ষমতাসীনদের অন্তর্দ্বন্দ্বে দেড় বছর না কাটতেই ১৯৭৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তারাকি তাঁর সহযোগী হাফিজুল্লাহ আমিনের হাতে ক্ষমতা ও প্রাণ দুই-ই হারান। তিন মাস পর হাফিজুল্লাহ আমিন একই ভাগ্যবরণ করেন পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বী কমরেড বারবাক কারমালের হাতে। তিনি ক্ষমতায় থাকেন ’৬৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত।
বারবাক কারমালের আমলে আফগানিস্তানে ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গ্রুপ মুজাহিদীনরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর সমাজতন্ত্রের বিশ্বাসী পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি ভূমি সংস্কার নীতি গ্রহণ করে। ভূস্বামীদের জমি কৃষকদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়। পীর ও মাদরাসার ওস্তাদদের আধিপত্য হ্রাসের উদ্যোগ নেয় তারা। এ উদ্যোগ জনসমর্থন পায়নি আফগান সমাজব্যবস্থায় ধর্মীয় নেতাদের প্রভাবের কারণে। সোভিয়েতপন্থি পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি ছিল সেনাবাহিনী ও বুদ্ধিজীবীনির্ভর দল। রক্ষণশীল একটা সমাজের পরিবর্তন আনার মতো জনসমর্থন বা সাংগঠনিক কাঠামো তাদের ছিল না। নেতারা কোন্দলে ব্যস্ত থাকায় সাধারণ মানুষ তাদের ওপর ছিল বিরক্ত।
এ অবস্থায় আফগানিস্তানের বামপন্থি সরকারকে রক্ষায় পাঠানো হয় সোভিয়েত সৈন্য। আমেরিকা ও সোভিয়েত প্রক্সি যুদ্ধের উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত হয় আফগানিস্তান। আফগান মুজাহিদদের পেছনে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সুস্পষ্ট মদত। পাকিস্তানও তাদের সব ধরনের সহায়তা দিত ওয়াশিংটনের ইশারায়। মুজাহিদীন নেতাদের অনেকেই ছিলেন যুদ্ধবাজ হিসেবে পরিচিত। মার্কিন মদতের পাশাপাশি হেরোইন উৎপাদন ছিল তাদের ব্যবসা।
বারবাক কারমাল ১৯৮৬ সালে ক্ষমতা ছাড়েন নাজিবুল্লাহর কাছে। কারমাল বিদ্রোহীদের সঙ্গে আপসের পক্ষপাতী ছিলেন। অন্যদিকে নাজিবুল্লাহ ছিলেন অতি বিপ্লবী। তাঁর আমলে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে মুজাহিদীনদের তৎপরতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। আফগান সৈন্যদের মধ্যে জেঁকে বসে দলত্যাগের প্রবণতা। আফগান সেনাদের ধরে রাখতে তাদের ঢালাও পদোন্নতি দেওয়া হয়। এক লাখ সদস্যবিশিষ্ট আফগান বাহিনীতে জেনারেলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার। যা সে সময় বিশ্বজুড়ে কৌতুকের বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। মুজাহিদীনদের সামাল দিতে নাজিবুল্লাহ ১৯৯০ সালে আফগানিস্তানকে ইসলামি রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়। ১৯৯২ সালের এপ্রিলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন মুজাহিদীনদের হাতে। নাজিবুল্লাহ কাবুলের জাতিসংঘ দপ্তরে আশ্রয় নেন। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তিনি। আফগানিস্তানে মুজাহিদীনদের ক্ষমতায় এনেছিল আমেরিকা ও পাকিস্তান। কিন্তু মুজাহিদীন সরকারের প্রতি আফগানদের সমর্থন যেমন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ তেমন তাদের পেছনের শক্তিদাতারাও হয়ে ওঠে বিরক্ত। এর আগে ১৯৯৪ সালে আফগান মাদরাসার ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে তালেবান বাহিনী। দেশকে দুর্নীতি, অনাচার, চুরি, ডাকাতি ও মাদক কারবার থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে তারা ছিলেন অঙ্গীকারবদ্ধ। দেওবন্দপন্থি তালেবানদের হাতে ১৯৯৬ সালে কাবুলের পতন হয়। তারা জাতিসংঘ দপ্তর থেকে নাজিবুল্লাহকে ধরে আনে। প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। আফগানিস্তানে ২০০১ সাল পর্যন্ত টিকে থাকে তালেবান শাসন। মার্কিন আগ্রাসনে তাদের পতন হয়।
তিন.
বাংলাদেশের এক মশহুর আলেম তথা রাজনৈতিক নেতা আফগানিস্তান সফরে গেছেন। মামুনুল হক নামের ওই রাজনৈতিক নেতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের পুত্র। দেশের ধর্মীয় পরিমণ্ডলে মামুনুল হকের গ্রহণযোগ্যতার পেছনে তাঁর বাবার অবদান যে বেশি তা অনস্বীকার্য। শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের রাজনীতি বা জীবনাদর্শের সঙ্গে দ্বিমত থাকলেও তিনি আমাকে স্নেহ করতেন। এ স্নেহের কারণ হুজুরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ আমলে দায়ের করা এক অদ্ভুত মামলা। আমি যে মামলার বিরুদ্ধে এক সাপ্তাহিক পত্রিকায় কলাম লিখেছিলাম, তাতে বলেছিলাম, ‘বয়সের ভারে যিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না, চোখেও ঠিকমতো দেখেন না, তাঁর বিরুদ্ধে যারা পুলিশ হত্যার মামলা দায়ের করেছে, তাদের মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়।’
বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান দক্ষিণ এশিয়ায় সার্কের সক্রিয় সদস্য। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সার্ক গঠনের উদ্যোগ নেন। সেনাপতি শাসক এরশাদের আমলে এ সংস্থাটি বাস্তবে রূপ নেয়। বিশ্বের অন্যান্য আঞ্চলিক সংগঠনের তুলনায় সার্ককে অনেকে ব্যর্থ বলে অভিহিত করেন। তবে আমার ব্যক্তিগত ধারণা, সার্কের একটি সাফল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এটি গঠিত হওয়ার চার দশকের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান প্রতিবেশী দুই দেশ কোনো বড় ধরনের যুদ্ধে লিপ্ত হয়নি।
মামুনুল হক এমন একসময় আফগানিস্তান গেলেন যখন আমেরিকা সে দেশে বিমানঘাঁটি করার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সে প্রস্তাব তালেবানরা প্রত্যাখ্যান করেছে স্পষ্টভাবে। মামুনুল হকের কাবুল সফর সে দেশের ইসলামি হুকুমতকে কিছুটা হলেও সাহস জোগাবে। বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলো গড়ে উঠেছে ভারতের দেওবন্দ মাদরাসার আদর্শ পাঠ্যক্রম অনুসারে। দেশের আলেম-ওলেমাদের সিংহভাগ দেওবন্দপন্থি। মামুনুল হকের আফগানিস্তান সফর তাঁর প্রতি দেশের দেওবন্দপন্থিদের সমর্থন আরও বাড়াবে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তা মূলধন হিসেবে কাজে লাগাবে।
লেখক : সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইমেইল : [email protected]