১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ১৭:১৭

বিচারকের স্বাক্ষর জাল করায় পেশকারসহ ৫ জন জেল হাজতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বিচারকের স্বাক্ষর জাল করায় পেশকারসহ ৫ জন জেল হাজতে

বগুড়ায় বিচারকের স্বাক্ষর জাল করার অপরাধে সাবেক পেশকারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। 

মাদক মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মচারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

গত সোমবার তাদেরকে বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদ সাজন, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নান ও মাদক মামলার আসামি মোক্তার হোসেন। গ্রেফতারকৃতরা বগুড়া সদর উপজেলার বাসিন্দা।

জালিয়াতির এ ঘটনায় গত সোমবার বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার মোট আসামি ৯ জন। গ্রেফতারকৃত ছাড়া অন্য ৪ চারজন আসামিরা হলেন অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদ, নিশিন্দারা এলাকার ওহেদুজ্জামান মাসুদ, নওগাঁর আয়েশা আক্তার শিমু ও মরিয়ম আক্তার নিপু। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদসহ পাঁচ জন ২০২০ সালের একটি মাদক মামলার আসামি ছিলেন। গত ১৪ অক্টোবর এই মামলার আসামিদের স্বাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। মামলার আরেক আসামি আয়েশা আক্তার শিমু জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন। তবে সেদিন আবু সাহেদ, মোক্তার হোসেন ও ওয়াহেদুজ্জামান আদালতে হাজিরা দেন। আর মরিয়ম আক্তার নিপুর পক্ষে তাদের আইনজীবী আদালতে সময় প্রার্থনা করেন। স্বাক্ষী না থাকায় বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা আসামিদের সময় প্রার্থনা মঞ্জুর করে আরেকটি দিন ধার্য করেন। 

কিন্তু এই দিন ধার্যের আদেশ নথি আদালত থেকে গায়েব হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই দিন বিকেলে বেঞ্চ সহকারী আব্দুর রশিদ একটি নথি পান। এতে দেখা যায়, সাবেক পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদের পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৪৯ ধারার বিধান মতে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিতের নথিতে আসামিদের অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশ দেয়া আছে।

বিষয়টি খোঁজখবর করে আদালত কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারেন সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদ সাজনের যোগসাজশে বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছেন। 

জালিয়াতি মামলার বাদী মো. মাকসুদুর রহমান জানান, আব্দুল মান্নান আদালতের পেশকার ছিলেন। তার ছেলে আবু সাহেদ ২৬০ পিস ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হন। সেই মামলার শুনানি ছিল। পেশকার হওয়ার সুবাদে তিনি আদালদের অন্য কর্মচারীদের হাত করে নথি জালিয়াতি করেন। 

বগুড়ার সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, সিজিএম আদালত থেকে বিচারকের স্বাক্ষর ও নথি জালিয়াতির ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়। পরে গত সোমবার আদালত থেকে তিন কর্মচারীকের আটক করা হয়। শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযান পরিচালনা করে আব্দুল মান্নান ও মোক্তার হোসেনকে আটক করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে ওইদিনই গ্রেফতারকৃতদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর