নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজাহান ভূঁইয়ার এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় দাউদপুর ইউনিয়নের আসুলিপাড়া গ্রামে ভাতাপ্রাপ্ত মরহুম এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালায়। মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বিপ্লব হাসানের স্ত্রী ঋতু আক্তার এ প্রতিবেদককে বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, আমার শ্বশুর ফরহাদ মিলিটারি ভাতাপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার অবর্তমানে আমার শাশুড়ি এখন ভাতা পাচ্ছেন।
হামলার শিকার এ নারী বলেন, রূপগঞ্জের ভোটে বিজয়ী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার দেবর মেহেদী হাসান সজিব কেটলি প্রতীকে অংশ নেওয়া শাজাহান ভূঁইয়ার এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের বাড়িতে গোলাম দস্তগীর গাজীর এক থেকে দেড়শ সন্ত্রাসী রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ঘরের থাই, আসবাবপত্র, হাড়ি-পাতিল, বাথরুমের ট্যাবসহ পুরো বাড়ি ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। এ সময় আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি দেলোয়ারা বেগম আমার এক নবজাতক সন্তানসহ দুই সন্তানকে কোলে নিয়ে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করছিল। সে অবস্থায় হামলাকারীরা লাঠি দিয়ে তার দুই হাত হাতে আঘাত করে জখম করে দেয়। এ সময় আমার চার মাসের নবজাতক মেয়ে শিশু আমার শাশুড়ির হাত থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়। ছোট্ট নবজাতককে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দিয়ে তার শাশুড়ির হাতে জখম করে দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুই সন্তানের জননী এই নারী।
তিনি বলেন, এ সময় আমার শরীর থেকে জোর করে গহনা কেড়ে নিয়ে গেছে। আক্রমণকারীরা আমার ঘরের গুরুত্বপূর্ণ সব জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। হঠাৎ করে এক থেকে দেড়শ সশস্ত্র মানুষের আক্রমণের ঘটনা যেন আমাদের ওপর এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
হামলার শিকার এই নারী জানান, দাউদপুর ইউনিয়নের আসুলিপাড়ার নুরুন্নেসা স্কুলে তার দেবর মেহেদী হাসান সজীব কেটলি প্রতীকে এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পূর্বে একাধিকবার নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এমন হামলার আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন। তবুও নির্বাচনে হার-জিত থাকে, এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমার দেবর এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। আমরা এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। গণমাধ্যম প্রতিবেদকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক সহযোগিতা ও চান তিনি। এ নারী আশঙ্কা করে বলেন, আক্রমণের সময় আমার স্বামী ও দেবর বাড়িতে থাকলে হয়তো তাদের লাশ ফেলে যেত। এ ঘটনার প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।