বগুড়ায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মেয়ের বাবা মো. শাকিল আহমেদ (৪০)কে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে জিতু ইসলাম নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে শহরের ফুলবাড়ী মধ্যপাড়া করতোয়া নদীর ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল শহরের শিববাট্টি শাহি মসজিদ এলাকার সাজু মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় রিকশাচালক ছিলেন।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত জিতু ইসলামসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার জিতু বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক।
নিহতের স্বজনরা জানান, বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু বেশ কিছুদিন ধরে শাকিলের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় শাকিলের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয় জিতুর। এ নিয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। তারই জের ধরে শনিবার বিকেলে শাকিলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে মারপিট করে। একপর্যায়ে শাকিল তার বাড়ি থেকে সটকে করতোয়া নদীর পাড় এলাকায় তার বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে জিতু তার দলবল নিয়ে শাকিলকে তার বোনের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে বেদম মারপিট করে নদীর ঘাটে ফেলে রেখে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন শাকিলকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সন্ধ্যার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল জানান, জিতু জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক। জিতুর অপরাধের দায় সংগঠন নেবে না। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাসির জানান, আসামি জিতু শাকিলের ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু শাকিল বিয়ে না দেওয়ায় তাদের মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। শনিবার বিকেলে জিতু ৪ থেকে ৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে শাকিলকে তুলে এনে মারপিট করে। হাসপাতালে ভর্তির পর শাকিল মারা যায়। এ ঘটনায় জিতু ও মতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিতু এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ৪ টি মামলা রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় সংগঠন থেকে জিতুকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। একই সাথে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল বগুড়া জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলাম-কে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। দলের নেতাকর্মীদের তার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ না রাখার নির্দেশ প্রদান করা হলো। স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জিতু ইসলামের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ