বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে শুরু হচ্ছে আইসিসি চতুর্থ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টেস্ট সিরিজ খেলতে এখন শ্রীলঙ্কায়। দ্বীপরাষ্ট্র সফরে তিন অধিনায়কের নেতৃত্বে ২ টেস্ট এবং ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-২০ ম্যাচ সিরিজ খেলবে। টেস্ট দলকে নেতৃত্বে দেবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়ানডের অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও টি-২০ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। নাজমুল বাহিনীর শ্রীলঙ্কা সফর শুরু হবে টেস্ট সিরিজ দিয়ে। আগামীকাল ‘দুর্গনগরী’ গলে শুরু প্রথম টেস্ট। এ টেস্ট দিয়েই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। টেস্ট শুরুর আগে গতকাল অনুশীলন করেছেন টাইগাররা। কিন্তু জ্বরের জন্য অনুশীলন করেননি সহ অধিনায়ক ও ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। টাইগার টেস্ট সহ অধিনায়ক জ্বরের জন্য বিশ্রামে আছেন। হয়তো আজ অনুশীলন করবেন। টাইগার হেড কোচ ফিল সিমন্স জানিয়েছেন, গল টেস্টে মিরাজের খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। টাইগার কোচ আরও বলেন যদি খেলতে না পারে, তাহলে অন্য কেউ খেলবেন, ‘হ্যাঁ, মিরাজের জ্বর। গত কয়েক দিনের চেয়ে আজ (গতকাল) সকালে ভালো দেখেছি ওকে। চিকিৎসা চলছে। আশা করি আগামীকাল (আজ) সে অনুশীলন করতে পারবে। তাকে নিয়ে অবশ্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। তবে একজনের অনুপস্থিতি মানে অন্য আরেকজনের জন্য সুযোগ। সবাই মন থেকে চাইছে মিরাজ সেরে উঠুক। সবাই এটাও জানে, যদি মিরাজ না খেলে, তাহলে কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। এটা একটা দুশ্চিন্তা। তবে দুশ্চিন্তা থাকা ভালো।’ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট কলম্বোয় ২৫-২৯ জুন।
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় ২০১৭ সালের পর ফের টেস্ট সিরিজ খেলতে গেছে টাইগাররা। আট বছর আগের সিরিজটি টাইগারদের জন্য ছিল স্মৃতিময়। ওই সফরে গলে টাইগাররা হেরেছিল ২৫৯ রানে। কিন্তু ৪ উইকেটে জিতেছিল কলম্বোতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট জয়টি ছিল ওই সিরিজেই। সেটা ছিল আবার বাংলাদেশের ১০০তম টেস্টে। ২০১৩ সালে আরও একবার খেলেছিল গলে। ওই টেস্টটি ড্র হয়েছিল। সেবার প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৯৬ ওভারে ৬৩৮ রান করেছিল। মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন গলে। ২০০ রান করেছিলেন। আগামীকাল শুরু টেস্টেও খেলবেন মুশফিক। সাবেক অধিনায়ক একটি বিরল রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ারে ১০০ টেস্ট খেলার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সাবেক এ অধিনায়ক। ১২ বছর আগের গল টেস্টে ১৯০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল ও ১০০ রান করেছিলেন নাসির হোসেন। দুজনই এখন সাবেক ক্রিকেটার।
প্রশ্নটির মুখোমুখি হতে হবে, জানতেন সিমন্স। কলম্বো আসার আগের দিন মিডিয়ার মুখোমুখিতে টেস্ট সিরিজ নিয়ে কথা বলছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তখনো জানতেন টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডে অধিনায়কও তিনি। মিডিয়াতে কথা বলে টিম হোটেলে যাওয়ার পরপরই বিসিবি নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে মেহেদি মিরাজের নাম ঘোষণা করে। নাজমুলের হাত থেকে দায়িত্ব কেড়ে নেওয়ার কোনো ব্যাখ্যাও জানায়নি বিসিবি। হঠাৎ নেতৃত্ব বদলের বিষয়টি নাজমুলের পারফরম্যান্সে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে না বলেন টাইগার হেড কোচ। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না কোনো প্রভাব পড়বে। উইকেটে গিয়ে তার কাজ ক্রিকেট খেলা। অন্য সব ভাবনা খেলার পরে। তাই আমি মনে করি এটা তার ক্রিকেটে প্রভাব ফেলবে না।’
গলের ইতিহাস বলে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পান। তবে ২০০৪ সালে সুনামির পর উইকেটের আচরণ বদলে গেছে অনেক। এখন ব্যাটাররাও রান করেন। এই মাঠের একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরি ক্রিস গেইলের। ডাবল সেঞ্চুরি রয়েছে ১২টি। এখানে দুজন স্পিনার শয়ের ওপর উইকেট শিকার করেছেন। ১৫ টেস্টে মুরালিধরনের শিকার ১১১ এবং রঙ্কণা হেরাথের উইকেট সংখ্যা ১৯ টেস্টে ১০২টি। গলের উইকেটে ব্যাটার ও স্পিনাররাই প্রাধান্য বিস্তার করছেন। উইকেটের আচরণ দেখেই একাদশ সাজানো হবে বলেন টাইগার কোচ সিমন্স, ‘কম্বিনেশন কেমন হবে এখনো ঠিক করিনি। উইকেট দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। কাল (আজ) উইকেট দেখে তবেই আমরা কম্বিনেশন নিয়ে ভাবব। উইকেট দেখে মনে হচ্ছে খুব ভালো। কাল আবার দেখে বুঝতে পারব।’ নাজমুল বাহিনীতে পেসারের সংখ্যা চার- নাহিদ রানা, খালেদ আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও ইবাদত হোসেন। ডান হাতি ফাস্ট বোলার ইবাদত দলে ফিরেছেন দুই বছর পর। স্পিনার চারজন- তাইজুল ইসলাম, মিরাজ, নাঈম হাসান ও হাসান মুরাদ।