ইসরায়েলের হামলার জবাবে আবারও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ (IRNA) জানিয়েছে, দেশটির সশস্ত্র বাহিনী একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে আঘাত হেনেছে। এসব শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। খবর আল জাজিরার।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল ১৩ জানায়, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র দেশটির উত্তর উপকূলীয় শহর হাইফা এবং আশপাশের তামরাতে আঘাত হেনেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে ইরানি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে উত্তর ইসরায়েলের আকাশে উড়তে দেখা গেছে, যেগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে আল জাজিরার যাচাইকারী প্ল্যাটফর্ম সানাদ (Sanad)।
এর আগে শনিবার ইরান জানিয়েছিল, দ্বিতীয় দিনের মতো ইসরায়েল তাদের ওপর সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এবার ইরানের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক খাতকে লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে ইসরায়েল। দেশটির দক্ষিণ পার্স (South Pars) গ্যাসক্ষেত্রে হামলার ফলে সেখানে আগুন ধরে যায়। গ্যাসক্ষেত্রটি ইরানের অন্যতম প্রধান শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র।
রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানায়, দক্ষিণ পার্সের ১৪ নম্বর প্রকল্প থেকে প্রতিদিন সরবরাহ হওয়া প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ আপাতত বন্ধ রয়েছে। যদিও পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ জানায়, আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও পরিষ্কার নয়।
ইসরায়েলের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ফক্স নিউজকে জানান, এই হামলা ছিল তেহরানকে সরাসরি সতর্ক করার উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, 'আমরা বুশেহরের পর আরও একটি গ্যাসক্ষেত্রে আঘাত হেনেছি। ইরানের জাতীয় অবকাঠামো এখন আমাদের লক্ষ্যবস্তু।'
জ্বালানি বিশ্লেষক মানোশেহর তাকিন আল জাজিরাকে বলেন, দক্ষিণ পার্সে হামলা ইরানের অভ্যন্তরীণ শক্তি ব্যবস্থাকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তিনি বলেন, 'এটি ইরানের অর্থনীতিকে পক্ষাঘাত করার একটি চেষ্টা। অভ্যন্তরীণ গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা ও অব্যবস্থাপনার চাপে ছিল।'
আল জাজিরার প্রতিবেদক নুর ওদেহ, যিনি জর্ডানের আম্মান থেকে রিপোর্ট করছেন, বলেন, 'ইসরায়েল আগে কেবল সামরিক অবকাঠামো, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি লক্ষ্য করত। এখন তারা সরাসরি ইরানের বেসামরিক অর্থনীতিকেও টার্গেট করছে। এতে ক্ষতির মাত্রা অনেক গভীর হতে পারে।'
সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/মুসা