নওগাঁয় বিলকিস আক্তার (৭০) নামে এক বৃদ্ধা মাকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া সেই ছেলেসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত সোমবার রাতে ওই বৃদ্ধা মা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করলে রাতেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন বৃদ্ধা বিলকিস আক্তারের ছেলে মোস্তাফিজুল ইসলাম সৌরভ (৩২), শহরের চকদেব এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ খোকন (৪৫) এবং শহরের কাজীর মোড় এলাকার চান্দুর ছেলে নাহিদ ইসলাম (৩৫)।
এর আগে গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে বড় মেয়ের বাড়ি থেকে শহরের কাজির মোড়ে নিজের বাড়িতে গেলে দু’তলার ফ্ল্যাটে ঢুকতে গিয়ে সিঁড়ির মুখে লোহার কাচি গেইট এবং সেখানে তালা মারা দেখতে পান ওই বৃদ্ধা। তালা মারার বিষয়টি ছেলে মোস্তাফিজুলকে জানালে তিনি সাফ জানিয়ে দেন তাকে বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য গেটে তালা ঝুলিয়েছেন। পরে বাড়ির সামনে বসে অবস্থান নিয়ে বসতবাড়ির সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে তাকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন ছেলের বিরুদ্ধে। বিকালে মা এবং ছেলের পক্ষে লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি এবং সংঘর্ষ ঘটে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে দুই পক্ষকেই থানায় আলোচনার জন্য নিয়ে যায়।
নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বৃদ্ধ মাকে বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেয় তার ছেলে সৌরভ এবং তার বন্ধুরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ তাদের দুই পক্ষকেই আলোচনার জন্য থানায় নিয়ে আসে। আলোচনা চলা অবস্থায় সৌরভ তার মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং মারধর করতে চায়। পুলিশ তখন তাকে আটক করে। বৃদ্ধা ওই মা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করলে অভিযুক্তদের সোমবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর বসতবাড়ির জমি নিয়ে ছেলে মোস্তাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মা বিলকিস আক্তারের বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর আইন অনুযায়ী বিলকিস আক্তার ও তার তিন সন্তান বসতবাড়ির অংশীদার হন। কিন্তু মোস্তাফিজুল ইসলাম বসতবাড়ির পুরো সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে তার মা ও বোনদের তাদের অংশের জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু মা ও বোনেরা তাকে বসতবাড়ির জমি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। ছেলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বিলকিস আক্তার ২০২১ সাল থেকে অধিকাংশ সময় নওগাঁ শহরেই বড় মেয়ের বাড়িতে থাকছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ