'আমি যেই মাপের লোক আমারে সেই মাপের একটা অস্ত্র দিয়ে পাশাইতি (ফাঁসানো), বুড়া অস্ত্র দিয়া আমার মানসম্মান শেষ করলি'- এমন একটা স্ট্যাটাস দেখা গেছে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক একেএম ফরিদ উদ্দিনের ফেসবুকে।
এ স্ট্যাটাসটি নিয়ে জেলাব্যাপী বিভিন্ন মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ফেসবুক পোষ্টের ২২ ঘণ্টায় কমেন্ট করেছেন ৫২০ জন, শেয়ার করেছেন ১৯১ জন আর লাইক করেছেন ১৫০০ জন।
এদিকে কারাবন্দি এই যুবদল নেতার ফেসবুকে পোস্ট করা স্ট্যাটাসটি নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্ট্যাটাসটির শুরুতেই লেখা আছে- সবাই শেয়ার করবেন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দেওয়া হয়। এরমধ্যে স্ট্যাটাসটি একবার সংশোধনও করা হয়েছে। স্ট্যাটাসের একঘণ্টা পর তার মুক্তির দাবিতে পালেরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওর একটি লিংকও শেয়ার করা হয়েছে ওই আইডি থেকে।
স্ট্যাটাসটি পড়লে মনে হয় যুবদল নেতা ফরিদ নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। কিন্তু কারাবন্দি অবস্থায় সেই সুযোগ রয়েছে কি না তা নিয়েই চলছে নানান সমালোচনা।
আবার কেউ কেউ ফেসবুকে লিখেছেন- 'অস্ত্র দিয়ে কাউকে ফাঁসাতে হলে ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। মানুষের সম্মানহানী করবেন না প্লিজ।'
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের জেলার (ভারপ্রাপ্ত) নুর মোহাম্মদ সোহেল মুঠোফোনে বলেন, কারাগারে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ নেই। অস্ত্র মামলায় ফরিদ রিমান্ডে ছিলেন। রবিবার (১৭ আগস্ট) তাকে রিমান্ডে নেয় সদর থানা পুলিশ। সেখান থেকে আদালতের মাধ্যমে রাত ৯ টার দিকে তাকে কারাগারে আনা হয়েছে। তিনি স্ট্যাটাস দিয়ে থাকলে বাহির থেকেই দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে সদর থানার ওসি আব্দুল মোনাফ এর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করে তার বক্তব্য জানা যায়নি তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ রেজাউল হক মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে মুঠোফোনে বলেন, ফরিদ একদিনের রিমান্ডে ছিলেন। রিমান্ডে ও হাজতে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ নেই। তার ব্যবহৃত মোবাইল জব্দ আছে, হয়তো তার আইডি ব্যবহার করে কেউ স্ট্যাটাস দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ আগস্ট রাতে সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের পালেরহাট এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে যুবদল নেতা ফরিদ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। তার বাড়ি থেকে একনলা একটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ১৪টি মামলা রয়েছে। পরদিন ১১ আগস্ট অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ। একইদিন বিকেলে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে তাকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল