চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে রবিবার (২৪ আগস্ট) বাগেরহাট জেলা সদরসহ ৯টি উপজেলায় সর্বাত্বক হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই হরতাল ও অবরোধ চলাকালে জেলা শহরসহ ৯টি উপজেলার সদরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল, দোকানপাট, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি অফিস ও স্কুল কলেজ বন্ধ ছিল। মোংলা বন্দরে জেটেতে পন্য ওঠানামা ও পরিবহনও বন্ধ ছিল। মোংলা ইপিজেড ও শিল্পাঞ্চালেও কোন কাজ হয়নি। মোংলা- খুলনা, মোংলা-ঢাকা, বাগেরহাট-ঢাকা, খুলনা-বাগেরহাট-বরিশার, সাইনবোর্ড-শরণখোলা মহাসড়কসহ জেলার সব উপজেলা সড়কগুলোতেও দূরপ্লাল্লাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এমনকি হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ চলাকালে জেলার ছোট বড় নদীর খেয়া ও সড়ক বিভাগের ফেরিও চলাচল করেনি। এরফলে মোংলা বন্দরসহ বাগেরহাট জেলা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ নিয়ে ব্যপক প্রচারণা চালানোর ফলে লোকজন ঘর থেকে তেমনটা বের হয়নি। তবে, এদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরিক্ষা থাকায় পরিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তাদের পায়ে হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে হয়েছে। একইদিন ঢাকায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিলসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বাগেরহাটের জনতা।
হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ চলাকালে সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান, সাবেক সিনিয়র সচিব ড. ফরিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় বিএনপির গবেষণা সম্পাদক শামিমুর রহমান শামীম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক প্রকৌশলী এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, যুগ্ম আহবায়ক ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক খাদেম নিয়ামুন নাসির আলাপ, সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, বিএনপি নেতা প্রকৌশলী মাসুদ রানা, শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, শেখ শাহেদ আলী রবি, সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ফকির তারিকুল ইসলাম, সাবেক সাধারন সম্পাদক সুজন মোল্লা, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমীর এডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, জামায়াতের জেলা সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস, জেলা জামায়াতের যুব বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুরুল হক রাহাত, জেলা জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার হাজার হাজর নারী-পুরুষদের নিয়ে জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য রাখেন। কর্মসূচি চলাকালে নের্তৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রয়েছে। বর্তমান সিইসি আওয়ামী লীগ ও ভারতের প্রেসক্রিপশনে সংসদ নিবাচন বানচাল করতে কাজ করছে। ভারতের সিদ্ধান্তেই বাগেরহাটের আসন কমিয়ে তিনটি আসন করেছেন, যেটা বাগেরহাট জেলাবাসী কিছুতেই মেনে নিবে না। বাগেরহাটকে উন্নয়ন বঞ্চিত করতে পরিকল্পিকভাবে একটি কমানোর প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার শুনানীতে নির্বাচন কমিশন জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল না করলে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য মোংলা সমুদ্র বন্দরের পন্য ওঠানামা বন্ধ করে বাগেরহাট জেলাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। এতে করে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানী রপ্তানী বাণিজ্য বন্ধ হলে এর দায়দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকাকেই নিতে হবে। সিইসি তার এমন হটকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে অচিরেই নির্বাচন কশিশন অফিস ঘেরাও করে রাখা হবে বলেও হুঁশিয়ারী দেন বক্তারা।
বিডি প্রতিদিন/এএ