কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা বিকাশ এবং স্থানীয় জীবিকার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে কক্সবাজারের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র, কুটির ও ছোট ব্যবসায় (সিএমএসএমই) খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের জিডিপিতে এ খাতের অংশ ২৫ থেকে ২৭ শতাংশ, আর শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৪০ শতাংশ আসে এখান থেকে। তবু এই সম্ভাবনাময় খাতটি নানা প্রতিবন্ধকতায় জর্জরিত।
সোমবার (২৮ জুলাই) কক্সবাজারের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘কক্সবাজারে ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসায়ে প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপ। ব্র্যাকের ইমপ্রুভিং স্কিলস অ্যান্ড ইকোনমিক অপরচুনিটিজ ফর ওমেন অ্যান্ড ইয়ুথ ইন কক্সবাজার (আইএসইসি) প্রকল্পের আওতায় এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা পাঁচটি প্রধান প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করেন। এগুলো হলো সীমিত অর্থায়নের সুযোগ, বাজার সংযোগের ঘাটতি, প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার অভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব, অবকাঠামোগত দুর্বলতা। সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান।
ব্র্যাকের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির আইএসইসি প্রকল্পের লিড খন্দকার ফখরুল আলম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘স্থানীয় অর্থনীতির বিকাশে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বাড়ানো এবং টেকসই সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংক তখনই ঋণ দেবে, যখন উদ্যোক্তার ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা থাকবে। তবে যদি কেউ সব নিয়ম মেনে চলেও ঋণ না পান, তাহলে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেন। আইন ও বিধি অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংলাপে আরো বক্তব্য দেন রুচিকা বেহেল, প্রধান, আইএলও কক্সবাজার; মোয়াজ্জেম হোসেন, উপপরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর; রাসেল বড়ুয়া, সহকারী মহাব্যবস্থাপক, বিসিক কক্সবাজার; জাহানারা ইসলাম, সভাপতি, কক্সবাজার ওমেন চেম্বার; আবু মোরশেদ চৌধুরী, সভাপতি, কক্সবাজার চেম্বার; মমতাজ উদ্দিন বাহারী, সাধারণ সম্পাদক, কক্সবাজার প্রেস ক্লাব। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ, আইএলও, ইউএনডিপি, সরকারি দপ্তর, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি মিলিয়ে ১৬৫ জন অংশ নেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ অর্থনৈতিক শুমারি অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রায় ৭৯ লাখ সিএমএসই প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলো দেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে।
আইএসইসি প্রকল্পটি কক্সবাজার জেলার ৯টি উপজেলার স্থানীয় জনগণের (হোস্ট কমিউনিটি) জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। এটি বাস্তবায়ন করছে ব্র্যাক, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও ইউএনডিপি। প্রকল্পটির অর্থায়ন করছে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা এবং সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকার।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ