খল অভিনেতা মিশা সওদাগর। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিব খানের বাবা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় তাঁকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা ও কাজ নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
এখন কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো আছি। মহান আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমতে আমার লিগামেন্ট অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেজন্য আল্লাহর কাছে সবকিছুর জন্য অশেষ শুকরিয়া। এখন বাসায় আছি, বিশ্রামে। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই দেশে-বিদেশে যারা আমাকে দোয়া করেছেন তাদের প্রতি।
সবার মুখে মুখে শুধুই ‘বরবাদ’-এর ফুলঝুরি। কী বলবেন?
বরবাদ নিয়ে বলতে গেলে অনেক কথাই বলতে হবে। তবে বরবাদ ফাটিয়ে দিয়েছে। কারণ, এটির গল্প ইউনিক এবং জানা মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছবি এটি। একই সঙ্গে আমার করা সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি এটি এবং টেকনিক্যাল দিক সবচেয়ে উন্নতমানের। এটা একেবারে বাংলাদেশেরই সিনেমা। কিন্তু মানের দিক থেকে একেবারে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড। আমি প্রায় হাজারো সিনেমা করেছি। কিন্তু বরবাদে আমার ক্যারেক্টার একেবারে নতুন। শুধু আমি না, শাকিবের ক্যারেক্টার এবং লুকও একেবারে আলাদা ছিল।
দর্শকরা আরিয়ান মির্জা অর্থাৎ শাকিব খানের বাবা আদিব মির্জার প্রশংসায় পঞ্চমুখ...
এটা সত্যিই আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। দর্শক বা ভক্তরা যে এভাবে আমাকে নেবে তা কল্পনাও করিনি। আমি তো বলব, ‘বরবাদ’ নিয়ে সবার এত প্রশংসা আমি আমার পুরো ক্যারিয়ারে পাইনি। আমাকে যত নির্মাতা, প্রযোজক, অভিনেতা-অভিনেত্রী কল দিয়ে প্রশংসা করেছেন তা আমি আমার অভিনয় জীবনে আগে কখনো পাইনি। ছবিতে আমার চরিত্রটি আমার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি যদি কোনোভাবে এ চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হতাম তাহলে আমার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হতো। শাকিবের সঙ্গে ভাই, প্রতিদ্বন্দ্বী, চাচা সব ক্যারেক্টার করেছি। এবার বাবা চরিত্র। সো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এটি। আমি দেশে থাকলেও কোনো ভালো সিনেমা মুক্তি পেলে পরিবার নিয়ে দেখি। এবার দেশের বাইরে থাকলেও সেখানে পরিবার নিয়েই ‘বরবাদ’ দেখেছি। পরিবারের সবাই সিনেমাটির প্রশংসা করেছে। ছবিটি বর্তমান প্রজন্মের ছবি এবং বলা চলে আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা।
এ সিনেমাটি করতে পূর্বপ্রস্তুতি কেমন ছিল?
এ চরিত্রের জন্য আমি কয়েক মাস প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তখন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি পুরো সময়টা আদিব মির্জা হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি। বরবাদ ছবিতে আমি কয়েকটি গেটআপে হাজির হয়েছি। সব মিলিয়ে সেভাবে আমাকে তৈরি হতে হয়েছে। ভয়েস মডিউলেশন নিয়েও কাজ করতে হয়েছে। আমাকে সাধারণত অন্য সব ছবিতে যেভাবে দেখা যেত, এখানে একেবারে অন্যরকম ছিল। ছবিতে আমি শাকিবের বাবা। এমন চরিত্রে আমি আগে কাজ করিনি।
‘ইনসাফ’ কেমন হবে?
এটি ফুল কমার্শিয়াল সিনেমা। সবার ভালো লাগবে। কারণ এ ছবিতে রয়েছে অনেক দক্ষ অভিনেতা-অভিনেত্রী। ‘ইনসাফ’-এ মোশাররফ করিম, তাসনিয়া ফারিণ, শরীফুল রাজের মতো অভিনয়শিল্পী রয়েছেন। মোশাররফ করিম তো এক কথায় দুর্দান্ত অভিনেতা। আমি মনেপ্রাণে চাই তিনি নিয়মিত কমার্শিয়াল ছবিতে কাজ করুন। বাকি যারা আছেন সবাই ভালো। আশা করছি দর্শক হতাশ হবেন না।
তারকাখ্যাতির বিড়ম্বনায় কেমন পড়তে হয়?
মানুষ এখন আমাকে চিনে ফেলেছে তো। আমার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্ক জানে, বোঝে। তবে কিছু লোক তো অনেক আবেগী থাকে। তারা হয়তো জড়িয়ে ধরে, ছবি তোলেন। তবে আমি সে সময় অপ্রস্তুত হয়ে যাই। একটু রেগেও যাই কখনো কখনো। আবার একটু পর বুঝতে পারি ঠিক হয়নি। কেউ কেউ বোঝে। তো সব মিলিয়েই আমাকে চলতে হয়, আমার দর্শক তো সব শ্রেণিরই। সবার প্রতি শ্রদ্ধা রইল।