নায়করাজকে নিয়ে বিশেষ আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল অনেকদিন ধরে। তখন নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। তিনি খুব আগ্রহ নিয়েই রাজি হয়েছিলেন লিখতে। তিনি লিখে দিয়ে গেছেন। আজ তার সেই লেখাটি প্রকাশ হচ্ছে।
নায়করাজ- রাজ্জাকের জন্য এই উপাধি যথাযথ। সবার প্রিয় সাংবাদিক প্রয়াত আহমদ জামান চৌধুরী ভাই এই উপাধি দিয়েছিলেন। রাজ্জাক এক অসাধারণ অভিনয় প্রতিভা। নিজেই যেন একটি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। অভিনয় বা নির্মাণ কোনো ক্ষেত্রেই ছোট করে দেখার উপায় নেই তাকে। আমার প্রথম ছবি 'ওরা ১১ জন'-এ তিনি অভিনয় করেছিলেন- আমি সৌভাগ্যবান। এরপর আমার 'শুভদা'র কথা বলব। আহা, সে কি অসাধারণ অভিনয়। এই ছবিতে আনোয়ারা তার মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন। শুটিংয়ের সময়কার একটি ঘটনার কথা বলি। মা আর ছেলেকে ঘিরে অনেক ইমোশনাল দৃশ্য রয়েছে ছবিটিতে। যখন এসব দৃশ্যে রাজ্জাকের সলো শর্ট নিতে যেতাম তখন তিনি অনুরোধ করতেন আনোয়ারাকে যেন সামনে বসিয়ে রাখা হয়। কারণ মা সামনে না থাকলে নিজের মধ্যে ইমোশন ধারণ করা যাবে না। তার চিন্তার এই বিচক্ষণতায় সত্যি মুগ্ধ হই। এরপর 'চন্দ্রনাথ' ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ নায়কের জাতীয় সম্মান লাভ করলেন রাজ্জাক। আসলে তিনি সত্যিই আমাদের চলচ্চিত্র জগতের একজন রাজা। তাকে কেউ ডিঙাতে পারবে বলে মনে হয় না। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এমন রাজা একজনই জন্ম নেয়। রাজ্জাককে দেখে অন্তত তাই মনে হয়। টানা পাঁচ দশক সমান জনপ্রিয়তায় নায়ক হয়ে থাকা এবং চরিত্র অভিনেতা হিসেবে এখনো সমান জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। এটি শুধু রাজ্জাকের পক্ষেই সম্ভব। তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে শিল্পী-নির্মাতা-কলাকুশলী- এক কথায় পুরো ইউনিট অপ্রত্যাশিত সহযোগিতা পায়, অনেক কিছু শিখতে পারে। তাই এমন একজন চলচ্চিত্রকারকে আমরা আজীবন আমাদের মাঝে ধরে রাখতে চাই। আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।