সম্প্রতি বেশ কিছু গণমাধ্যমে খবর রটে উপস্থাপিকা ও অভিনেত্রী জাহারা মিতু এবং সাবেক সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। এরপরই বেগবান হয় নানা গুঞ্জন ও রটনা। তবে নতুন খবর হলো ওবায়দুল কাদের নয়, এই নায়িকা সম্পর্কে রয়েছেন অন্য একজনের সঙ্গে। ঠিক যেন কেঁচো খুঁড়তে অনেকটা কেউটের সন্ধানের মতো। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর মিতুর উত্তরার আবাস্থলের গেইটের উল্টোপাশে যখন আমাদের প্রতিবেদক অবস্থান করছিলেন, ঠিক তখনই দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে জাতীয় দলের তরুণ এক ক্রিকেটারের কালো রঙের হ্যারিয়ার গাড়ি এসে থামে নায়িকা মিতুর বাসার সামনে। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন সেই ক্রিকেটার নিজেই এবং সেই গাড়ি থেকে রাস্তায় নেমেই মিতু বাসায় প্রবেশ করেন অনেকটা মাথা নিচু করে। মনে হচ্ছিলো সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে হয়তো মিতু কিছুটা বিমর্ষ। এমনকি ওই এলাকার সবকটি সিসি ফুটেজ চেক করলেও ধরা পড়বে এই ঘটনা।
মিতু বাসায় ঢোকার মিনিট খানেক পর ওই ক্রিকেটার নিজেই গাড়িটি চালিয়ে চলে যান। এ প্রসঙ্গে কথা হয় মিতুর বাসার কেয়ারটেকারের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘মিতু আপা কখনোই প্রয়োজনব্যতীত বাসা থেকে বের হন না। মিডিয়ায় কাজ কম করার সুবাদে তিনি বাসাতেই থাকেন, তবে বাইরের কোনো নারী বা পুরুষ কেউই তার বাসায় এলাউড নন। এমনকি মিতুর ড্রাইভারও কখনো বাসার উপরে যাওয়ার অনুমতি পাননি। তবে একমাত্র এই কালো গাড়িটি আসলে বড়জোড় দু-এক ঘণ্টার জন্য বাইরে বের হন তিনি। এই লোকটি ছাড়া অন্য কাউকে গত কয়েক বছরে নিয়মিতভাবে তিনি দেখেননি।’
এ নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, সেই ক্রিকেটার ও মিতুর চেনাজানা বছর তিনেক বা তারও বেশি হতে পারে। এ নিয়ে মিতুর খুব ঘনিষ্ঠ একজনের সাথে কথা হয় আমাদের প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি দাবি করেন, ‘সেই ক্রিকেটার ন্যাশনাল টিমে ঢোকার আগে থেকেই তাদের সম্পর্ক। তাদের দেখা খুব কম হলেও তারা মোবাইল ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। বলতে পারেন তাদের জীবনে এই দুজনের বিকল্প অন্য কেউ নেই। সম্পর্কটি নিয়ে তারা খুবই সতর্ক এজন্যই বাইরের মানুষ তেমন কিছু জানে না।’বিষয়টি নিয়ে মিতুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে এ বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। যখন বলা হয় নিজেই স্বচক্ষে দেখেছি, তখন তিনি কিছুটা চুপ হয়ে যান। মিতু বলেন, ‘আপাতত এ বিষয়ে আমি মুখ খুলতে চাচ্ছি না। চাচ্ছি না- এসব নিয়ে এখনই নিউজ হোক। সময় হলে ঢাকঢোল পিটিয়েই সবাইকে জানাবো।
এদিকে, আজ শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় সেই ক্রিকেটারের সঙ্গেও। তিনি বলেন, ‘আপনারা কোত্থেকে এসব আজগুবি খবর পান। লোকমুখে শুনলেই কি এসব জিনিস সত্যতা পায়। এরকম কোনো ঘটনা নেই।’
এদিকে, মিতুর ঘনিষ্ঠ এক বান্ধবীর কাছে জানতে চাওয়া হয়- তিনিতো কাছ থেকে দেখেছেন, সেই ক্রিকেটারের সঙ্গে জাহারা মিতুর সম্পর্ক এবং এ সম্পর্কের ভবিষ্যত কি? তিনি হাসতে হাসতে জানান, ‘যদি টিকে তবে তা মিতুর জন্যই টিকবে। সেই ক্রিকেটার খুব জ্বালায় সব কিছু নিয়ে, তার রাগ অনেক। অন্যদিকে, মিতু সব ঠাণ্ডা মাথায় সব সামলে নেন। তিনি সবধরনের কাজ ও আড্ডা থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন- এই ক্রিকেটারে জন্যই।’
উল্লেখ্য, মিতু বরাবরই বলে এসেছেন তার বয়সে ছোট ছেলে পছন্দ, উইকিপিডিয়ার বয়স অনুযায়ী সেই ক্রিকেটারও তার ছোট। মিতু নিজেও ক্রীড়া উপস্থাপিকা ছিলেন, পরবর্তীতে চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছেন। তবে এখনো ক্রিকেট নিয়ে তার যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে, তাই ক্রিকেটারের সাথে প্রেম অবাস্তব কিছু নয়। সূত্রগুলোর কথার উপর ভিত্তি করে সময়ই বলে দেবে তাদের এই অলিখিত প্রেম কোনদিকে মোড় নেবে?
অন্যদিকে, অনুসন্ধানের আরেকটি দিক যাচাই করা হয় মিতুর সাথে মন্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে। ধানমন্ডিতে ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত বাসার কেয়ারটেকারের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘যতদূর জানি স্যারের কাছে আসা-যাওয়া ছিলো এক মিস ইউনিভার্স বিজয়ী মডেলের। যার নামটা তিনি মনে করতে পারছেন না। তবে ওই মডেল প্রায়ই যেতেন।’ এছাড়া আর কেউ আসতো কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘স্যার ৮টার মধ্যে মন্ত্রীপাড়ায় চলে যেতেন। একমাত্র ওই লম্বা মডেলকেই মাসে দু-একবার দেখা যেত।’
মিতুর কাছের সেই সমর্থিত সূত্রকেও প্রশ্ন করা হয় ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে। তিনি দাবি করেন, ‘মন্ত্রী প্রায়ই কল দিতেন মিতুকে, তবে মিতু সেটা ইগনোরই করতেন। হয়তো ১০ বার কল আসলে একবার ধরতেন। এটা নিয়ে মন্ত্রী খুব কষ্ট পেতেন। মন্ত্রী যে মিতুকে অনেক পছন্দ করতো- এটা মিতু জানতো। তবে মিতু বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে বলতো- তিনি মোবাইল থেকে দূরে থাকেন। এতে একসময় মন্ত্রী বুঝে যান, মিতু ইচ্ছে করেই এড়িয়ে চলছেন। তাই তিনিও পরবর্তীতে আর কল দিতেন না।’
বিডি-প্রতিদিন/শআ