শাহিন (ছদ্মনাম) চার বোনের একমাত্র ছোট ভাই। বাবার একটি ছোট চায়ের দোকানের আয়ে অভাব অনটনে চলত তাদের সংসার। খুব ছোট থাকতেই শাহিন বাবাকে চায়ের দোকানে সাহায্য করত। কিন্তু সংসারের অভাব অনটন যাচ্ছিল না।
২০০৭ সালে মাত্র ১৯/২০ বছর বয়সে কাজের জন্য বাহরাইন চলে যায়। বেতনের প্রায় সবটুকুই দেশে পাঠিয়ে দেয়। বাবা-মা এখন একটা ভালো বাসায় থাকে। বাবাকে আগের মতো দোকান চালাতে হয়না।
কিন্তু এই বারো বছর কেমন কাটছে বাহরাইনে শাহিনের দিনকাল? সারাদিন কাজের পর, বাড়তি কিছু আয়ের জন্য সাধ্যমতো ওভারটাইম করে। রান্নার কাজ থেকে শুরু করে ঘরের সব কাজ নিজেকেই করতে হয়। খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছে সবকিছু। কিন্তু মনের মধ্যে কষ্ট অন্য জায়গায়।
গত বারো বছরে চব্বিশটি ঈদ গেছে। মাত্র তিন বার বাবা-মায়ের সাথে ঈদ করার সুযোগ পেয়েছিল। দেশে যে চলে আসবে, সে সুযোগও নেই। বাবা-মাকে প্রতিমাসে যে টাকা পাঠায়, সবটাই খরচ করে ফেলে। আর শাহিনের কাছে কোন সঞ্চয়ও নাই, যা দিয়ে দেশে এসে কিছু করবে।
পরিবারের সবাইকে ভালো রাখতে বিদেশে থাকা ছাড়া কোন বিকল্প শাহিনের হাতে নেই। আর পরিবার থেকেও দেশে আসতে বলা হয় না। সম্পর্কটা যেন টাকার সাথে হয়ে গেছে। মোবাইলে ভালো আছিস কিনা জানার মাঝেই যেন পরিবারের দায়িত্ব শেষ।
কয়েকদিন পর ঈদুল আযহা। বরাবরের মতই কাটবে শাহিনের ঈদ। পরিবারের জন্য খুব ছোট বয়স থেকেই সব কিছু ছেড়ে সংগ্রামী জীবন বেছে নিয়েছে।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: উপ-পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন