শিরোনাম
- হাসিনাসহ পলাতকদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
- টরন্টোতে বিভিন্ন দাবিতে সিলেট প্রবাসীদের মানববন্ধন
- আজ থেকে ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু
- ঢাকার বাতাসের মান আজ অস্বাস্থ্যকর
- ডাকাতি-ছিনতাই, নদীতে লাশ বেড়েছে
- জামায়াতের রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
- ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
- জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক আজ
- সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে
- মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, বিক্ষোভ ঢাবিতেও
- লিবিয়া তহবিল কেলেঙ্কারিতে ৫ বছরের সাজা, কারাগারে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট
- গিফট নিয়ে হয়ে গেলাম প্রতারক : তানজিন তিশা
- টিকটকে আশ্লীলতা, আদালতের নির্দেশে বিয়ে করতে হচ্ছে দুই নাইজেরিয়ান ইনফ্লুয়েন্সারকে
- ১৪ বলে ৩৯ রান, তবু সুপার ওভারে নেই রিশাদ! প্রতিপক্ষও অবাক
- এআই এজেন্ট: শুধু নির্দেশ নয়, নিজেরাই নিচ্ছে সিদ্ধান্ত
- ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে হাতির আক্রমণে দুই মাহুত আহত
- ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স, স্বাক্ষরিত হতে পারে প্রতিরক্ষা চুক্তি
- ইথিওপিয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৪
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আইআরআই প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
- সুপার ওভারের রোমাঞ্চে সিরিজে ফিরল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন
শহীদ ময়নুলের কথা কেউ মনে রাখেনি
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
অনলাইন ভার্সন

বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে জীবন দিয়েছিলেন শহীদ ময়নুল হক। এ আন্দোলনে ঢাকার রাজপথে শহীদ নূর হোসেনেরও আগে রাজশাহীতে শহীদ হয়েছিলেন এই যুবলীগ নেতা। কিন্তু তার কথা কেউ মনে রাখেনি। নেই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, তাই এখন নিরবেই কেটে যায় তার জন্ম-মৃত্যুর দিন। এতে হতাশ তার পরিবার।
আজ শনিবার (২৩ মার্চ) শহীদ ময়নুল হকের ৬৮তম জন্মদিন। ১৯৫১ সালের এই দিনে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার ডাকনাম ময়েন। ১৯৮৭ সালের ২৬ অক্টোবর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ময়নুল। তার বাবার নাম মৃত আকরাম আলী। মা রাজিয়া বেওয়া।
শহীদ ময়নুল হকের মৃত্যুর পরের বছর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ময়নুলের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। ধীরে ধীরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বেগবান হয়। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে শহীদ হন নূর হোসেন। আন্দোলনে আরও গতি আসে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে।
এখন ১০ নভেম্বরকে ‘শহীদ নূর হোসেন দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। তবে নিরবেই চলে যায় শহীদ ময়নুলের মৃত্যুর দিন। অথচ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নূর হোসেনেরও আগে শহীদ হন ময়নুল। এখন তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুধু পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
চারঘাটের স্থানীয় বাসিন্দা ও শহীদ ময়নুলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৭ সালের ২৬ অক্টোবর চারঘাট উপজেলা কমপ্লেক্স ঘেরাও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ জন্য একটি মিছিল উপজেলা সদরের দিকে যেতে থাকে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ময়নুল হক। মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দিতে অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে সেদিন শহীদ হয়েছিলেন হার না মানা সৈনিক ময়নুল।
তার বাবা ছিলেন একজন কৃষক। অল্পবয়সে তিনি পিতৃহারা হন। তারপরেও ১৯৫৯ সালে বাদুড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৭২ সালে বাদুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে সরদহ কলেজে ভর্তি হলেও পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সংসারের হাল ধরেন। এর আগেই ১৯৬৮ সালে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের হাত ধরে তিনি রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ড. শামসুজ্জোহা পুলিশের গুলিতে নিহত হলে গোটা দেশ যখন ফুঁসে উঠে, তখনও শহীদ ময়নুল সে অন্দোলনে সামিল হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
ব্যবসায়ী ময়নুল হক স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে শহীদ হন। তার মৃত্যুর পর অনেক কষ্টে সংসার চালান স্ত্রী জাহানারা বেগম। সন্তানদের বড় করেন। পড়াশোনা করান। কিন্তু কারও সরকারি চাকরি হয়নি। ২০১১ সালে মেজো ছেলে জাহিদুল ইসলাম মারা গেছেন অসুস্থ হয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে।
শহীদ ময়নুলের ভাতিজা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর আগে দলের পক্ষ থেকে চাচার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হতো। কিন্তু এখন হয় না। এখন শুধু পরিবারের পক্ষ থেকে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। কবর জিয়ারত করা হয়। সেখানে ডাকলেই কেবল দলের নেতারা আসেন। এর বাইরে কেউ খোঁজ নেন না। এটা আমাদের পীড়া দেয়। আমরা শহীদের কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাইনি। শহীদ পরিবারের যে মূল্যায়ন, সেটাও পাইনি। অথচ শহীদ নূর হোসেন দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবেই পালন করা হয়।’
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘আমি যতদিন যুবলীগে ছিলাম, ততদিন চারঘাটে গিয়ে শহীদ ময়নুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতাম। পরবর্তীতেও পালন করা হতো। কিন্তু গেল কয়েক বছর থেকে হয় না।’
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ময়নুল হক রাজশাহীতে প্রথম শহীদ হয়েছিলেন। এটা সবাই জানে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর