বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

এসপিপত্নী খুনে উত্তর মেলেনি চার প্রশ্নের শিবির কর্মী গ্রেফতার

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

জঙ্গিবিরোধী ভূমিকা রাখা চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ‘ক্লু’ উদ্ঘাটনে চার প্রশ্নের উত্তর পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা এখন কোন জঙ্গি সংগঠন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত, কারা মিতুর মোবাইলে এসএমএস দিয়েছিল, তার ব্যবহার করা মোবাইলের বর্তমান অবস্থান কোথায়, কিলিং মিশনে কজন অংশ নিয়েছিল—এ চার প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে। তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এ চার প্রশ্নের উত্তর মিললে উন্মোচিত হবে আলোচিত এ হত্যা মামলার রহস্যজট। মিতু হত্যাকাণ্ড জঙ্গিরা ঘটিয়েছে এমন দাবি করলেও কোন জঙ্গি সংগঠন এ কাজ করেছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) দেবদাস ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা একরকম নিশ্চিত। তবে কোন জঙ্গি সংগঠন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।’ এদিকে সেই কালো মাইক্রোবাসটি জব্দ করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় মাইক্রোবাসের চালককেও আটক করা হয়। গতকাল রাতে এ অভিযান পরিচালনা করে গোয়েন্দা পুলিশ। মাইক্রোবাস জব্দ ও এর চালক আটকের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন সিএমপির কমিশনার ইকবাল বাহার। তবে এ মাইক্রোবাসটিই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছে কি না তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

সাবেক শিবির ক্যাডার গ্রেফতার : এসপির স্ত্রী মিতু হত্যায় জড়িত অভিযোগে আবু নছর গুন্নু নামে শিবিরের সাবেক এক ক্যাডারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ এলাকার একটি মাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘মিতু হত্যায় গুন্নুর সম্পৃক্ততা বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তাকে রিমান্ডে আনা হবে।’ পুলিশ জানায়, একসময় ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন গুন্নু। পাঁচ বছর আগে দেশে ফেরেন তিনি। পরে ফরহাদাবাদ এলাকায় একটি মাজারে খাদেম হিসেবে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় দশটির বেশি মামলা রয়েছে। সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘গুন্নু দুই দফায় মধ্যপ্রাচ্যে ছিলেন। বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী কাজে অংশ নেওয়ার তথ্য আছে তার বিরুদ্ধে। শেষ দফা পাঁচ-ছয় বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে হাটহাজারীর একটি মাজারে আড়াল নেন তিনি।’

প্রসঙ্গত, রবিবার সকালে নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। পুলিশের ধারণা, বাবুল আক্তারের জঙ্গিবিরোধী তত্পরতার কারণে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন তার স্ত্রী মিতু। মামলা তদন্তের মূল দায়িত্বে আছে নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তবে র‌্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিআই) তদন্তে সহায়তা করছে।

সর্বশেষ খবর