শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

শাফিনের পাশে ছিলেন না জাপার কেন্দ্রীয় নেতারা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাফিন আহমেদের পাশে ছিলেন না দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। শাফিন আহমেদকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট করার জন্য জাতীয় পার্টি থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হলেও কেন্দ্রের কঠোর নজরদারির অভাব ছিল। ঢাকা মহানগরী উত্তর জাতীয় পার্টিতে দলটির অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতার অবস্থান থাকলেও শাফিনের পাশে না থাকায় ফলাফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে বিরাট ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। তবে জাপার যুগ্ম-আন্তজার্তিকবিষয়ক সম্পাদক হাসিবুর রহমান জয় শাফিনের পক্ষে শেষ পর্যন্ত মাঠে ছিলেন। এদিকে নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্র থেকে তাদের কোনো নির্দেশনা ছিল না। আবার অনেকে দলে নতুন মুখ শাফিন আহমেদকেও মেনে নিতে পারেননি।

জানতে চাইলে শাফিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীরা আমার পক্ষে কাজ করবেন- এমনটাই তো হওয়ার কথা ছিল।’

জানা যায়, জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগরী উত্তরে প্রতিটি অঙ্গসংগঠনের থানা কমিটি পর্যন্ত রয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অতীতের যে কোনো সমাবেশে অন্তত ২০ হাজার নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণ দেখা গেছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ৫ হাজার নেতা-কর্মীর শাফিনের পাশে সবসময় থাকার কথা ছিল। প্রচারণার সময় পাশে তেমন কেউ ছিল না। নির্বাচন উপলক্ষে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে শাফিনের জন্য তেমন কোনো সভা-সমাবেশও করা হয়নি। দল থেকে আর্থিক সহযোগিতাও করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। কর্মীরা বলছেন, যেখানে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি সেখানে জাপার শীর্ষ নেতারা যদি একটু সহযোগিতা করতেন তাহলে ফল আরও ভালো হতো। মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কোনো ধরনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এমনকি পার্টির মধ্যমসারির কোনো নেতাও শাফিনের প্রচারণায় অংশ নেননি। শুধু প্রচারণার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জাপার যুগ্ম-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক হাসিবুর রহমান জয়ই মাঠে ছিলেন। এ বিষয়ে জয় বলেন, ‘এখানে শাফিন কোনো বিষয় নন। বিষয় হচ্ছে লাঙ্গল। এই লাঙ্গল প্রতীককে জয়যুক্ত করতে সবাই যদি সম্মিলিতভাবে মাঠে নামতেন তাহলে ফলাফল হয়তো ভিন্ন হতে পারত।’ দলের এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘পার্টিতে সবাই এখন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। শাফিনের বিষয়ে পার্টির সিনিয়র নেতারা যদি আমাদের লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিতেন তাহলে অবশ্যই আমরা মাঠে থাকতাম। শুরু থেকে পার্টির শীর্ষ নেতাদের এ বিষয়ে উদাসীন দেখা গেছে।’ ঢাকা মহানগরী উত্তরের এক সহসভাপতি বলেন, ‘ঢাকা উত্তরে এ নির্বাচন হয়েছে। অথচ এ নির্বাচনে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা অথবা থানায় থানায় নগর উত্তর থেকে কোনো দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। মহানগরী উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টু একবার সভা ডাকলেও সমন্বয়ের অভাবে শাফিনের পক্ষে মাঠে নামা হয়নি। উত্তরের সভাপতি ফয়সল চিশতীকেও মাঠে দেখা যায়নি।’ উত্তরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল বলেন, ‘জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী ও ভোটারদের মন জয় করার মতো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি দল।’

সর্বশেষ খবর