প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে যে চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে তৈরি হবে, তা হবে ভীষণ কঠিন। এ জন্য তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে। তরুণ উদ্যোক্তাদের সামনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ীই বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল, দৈবক্রমে বা দুর্ঘটনাবশত নয়। বাংলাদেশ গত ১০ বছরে যে বিস্ময়কর উন্নতি করেছে, তা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। কিন্তু এমনি এমনি এই উন্নয়ন হয়নি। গত ১০ বছরে এই ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে কেবল স্বাধীনতার চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ফলেই। গতকাল রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ লিডারশিপ কনক্লেভ ২০১৯- টুগেদার টুয়ার্ডস টুমরো’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান এমপি। এতে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এফবিসিসিআইর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, জেসিআই সভাপতি ইরফান ইসলাম, সহসভাপতি আরমান এ খান, আমজাদ হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক তরুণ উদ্যোক্তা, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির কারণেই বাংলাদেশ এতটা এগোতে পেরেছে। যে কোনো জাতির উন্নয়নের প্রথম ও প্রধান পূর্বশর্ত হলো নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মধ্যে এই বিশ্বাস সঞ্চার করেছেন। আজ আমরা যেখানে আসতে পেরেছি, সেটি তারই স্বাভাবিক ফলাফল মাত্র। কিন্তু তিনি কীভাবে এই বিশ্বাস সঞ্চার করেছেন? তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটি করেছেন তা হলো আমাদের জাতীয় মননে স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা প্রোথিত করেছেন। বিশ্বের খুব অল্প কয়েকটি দেশই স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে। এটি কোনো ছোটখাটো বিষয় নয়। এই জাতির সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছেন তারা, যারা ৭৫-এর পর ৯৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তারা এই প্রচার চালিয়েছেন যে, বাংলাদেশ আসলে দৈবক্রমে সৃষ্টি হয়ে যায়, পরিকল্পনামাফিক নয়। তারা বলতেন যে, ভুট্টো যদি ৭০-এর নির্বাচনের পর পর পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকতে দিরতন, তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না! এতটাই ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতি তারা করেছিল। সালমান এফ রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের নথির ভিত্তিতে গ্রন্থিত বই ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টিলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’-কে উদ্ধৃত করে বলেন, এই নথিগুলো থেকে দেখা যাচ্ছে যে বঙ্গবন্ধু সেই তরুণ বয়স থেকে, যখন তিনি একজন ছাত্রনেতা ছিলেন, তখন থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে চিন্তা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যেটা করেছেন সেটা হলো তিনি ইতিহাসের এই বিকৃতি সংশোধন করে দিয়েছেন। আর এ কারণেই বাংলাদেশের এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।