রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পবিত্র ঈদুল আজহা কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্যাগের মহিমা ও উৎসর্গের আনন্দ নিয়ে আগামীকাল সোমবার ১০ জিলহজ সারা দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ধর্মীয় উৎসবের দিন সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি করে থাকেন বলে এই ঈদকে কোরবানির ঈদও বলা হয়। মুসলিম বিশ্বের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর সুন্নাত অনুসারে এদিন পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। ঈদ উপলক্ষে এর মধ্যে সারা দেশ মেতে উঠেছে উৎসবের আনন্দে। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের উৎসবে শামিল হতে পথের ক্লান্তি ভুলে সবাই ছুটেছেন গ্রামের বাড়িতে। এ মুহূর্তে কোরবানির পশু কেনার জন্য হাটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট। ঈদ উদযাপনের অন্যান্য প্রস্তুতির জন্য চলছে নানা আয়োজন। সোমবার রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের প্রত্যুষে ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইলাল্লাহু, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ’-তকবির ধ্বনি দিতে দিতে ঈদ জামাতে হাজির হবেন মুসলমানরা। দেশের বিভিন্ন ঈদগাহ, খোলা মাঠ বা মসজিদে ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় শেষে সামর্থ্যবান মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যার যার সাধ্যমতো পশু কোরবানি দেবেন। পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই ঈদ। স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তিনি প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.)-কে আল্লাহর রাহে কোরবানি করতে উদ্যত হন। মহান আল্লাহ ইব্রাহীম (আ.)-এর এ উদ্যোগে খুবই সন্তুষ্ট হন। কিন্তু পুত্রকে কোরবানি হতে না দিয়ে মহান প্রতিপালক সন্তুষ্টির নিদর্শন হিসেবে বেহেস্তি দুম্বা পাঠিয়ে প্রিয় বন্ধুর আত্মত্যাগের নিয়তকে কবুল করে নেন। ফলে পুত্রের বদলে কোরবানি হয় দুম্বা। সেই দিনটি ছিল ১০ জিলহজ। সেই থেকে মসুলিম উম্মাহর জন্য প্রতিবছর এই দিনে পশু কোরবানি করা ওয়াজিব ঘোষণা করা হয়। প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) উম্মতে মোহাম্মদীর জন্যও পশু কোরবানি ওয়াজিব ঘোষণা করেন। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নাত হিসেবে কোরবানির গোস্তর তিন ভাগের একভাগ নিজের। বাকি দুই ভাগের এক ভাগ গরিবের হক এবং বাকি একভাগ আত্মীয়ের হক হিসেবে বণ্টন করা হয়। জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো দিন পশু কোরবানি করা যায়। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) ১০ জিলহজ পবিত্র ঈদুল আজহার দিন কোরবানি করাকেই উত্তম ঘোষণা করেছেন। রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের পাঁচটি জামাত। বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে। রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা শহর এবং প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায় ঈদ জামাতের প্রস্তুতি চলছে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল থেকেই তিন দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।  ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপগুলো জাতীয় ও ঈদ মুবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হয়েছে। কারাগার, হাসপাতাল, ভবঘুরে কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, শিশুসদনে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। ঈদ আনন্দের অংশ হিসেবে রেডিও-টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ঈদ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর