বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা পৌঁছে যাওয়ার পরদিনই গতকাল ভারতের নামকরা সবকটি জাতীয় গণমাধ্যম এক সুরে দাবি জানায়, ‘অবিলম্বে তিস্তা পানি চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে।’ একই সঙ্গে তারা সম্পাদকীয় মন্তব্যে বলেছে, ‘এনআরসি নিয়ে অযথা বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে শেখ হাসিনার হাত মজবুত করা প্রয়োজন।’ হিন্দুস্তান টাইমস থেকে টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দুর মতো প্রথম সারির দৈনিকগুলো সম্পাদকীয় নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে। এদের সবারই মন্তব্য : যেভাবে শেখ হাসিনা ত্রিপুরার সাবরুমের মতো ছোট্ট একটি শহরের পানীয় জল সরবরাহে যে ‘মানবিক’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এর পরে ভারতের পক্ষে তিস্তা-ফেনীসহ সব নদীর পানিবণ্টন নিয়ে চুক্তি করা উচিত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, দক্ষিণ ত্রিপুরার ছোট শহর সাবরুম। জনসংখ্যা মাত্র ৬ হাজার। অনেক দিন ধরেই এখানকার পানি আর্সেনিক দূষিত। এই পানি খেয়ে বহু মানুষ চর্মরোগে ভুগছে। নিকটবর্তী নদী ফেনী। এ নদী থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি ওই শহরে দেওয়া হবে। কিন্তু এই সামান্য সিদ্ধান্তে সাবরুম শহরের বাসিন্দারা যে উপকৃত হবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কূটনীতিবিদ এবং সাবেক হাইকমিশনাররা মনে করেন, সাবরুমে পানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে শেখ হাসিনা আদতে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন এবং তা দিয়েছেন ভবিষ্যতের কথা ভেবেই। আগামী দিনে বাংলাদেশিরাও এতে লাভবান হবেন। ফেনী নদীর ওপর যে সেতু নির্মিত হচ্ছে তা শেষ হলেই চট্টগ্রাম থেকে সাবরুমের দূরত্ব হবে মাত্র ৭০ কিমি.। শিগগিরই সাবরুম থেকে আগরতলা পর্যন্ত ট্রেন চালু হতে চলেছে। ট্রায়াল রান হয়ে গেছে। অতি সহজেই চট্টগ্রাম এলাকা থেকে সাবরুম হয়ে বাংলাদেশিরা ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। তাদের ঢাকা হয়ে আসার প্রয়োজন হবে না। তখন তো বাংলাদেশিরাও সাবরুম শহরে প্রবেশ করলে ওই ফেনী নদীর পানি পান করবে। দ্বিতীয় বিভ্রান্তি রয়েছে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে। বাংলাদেশ থেকে যে গ্যাস যাবে সেটা বাংলাদেশের নয়। ভারতেরই গ্যাস বাংলাদেশ হয়ে ত্রিপুরা ও উত্তরপূর্বে যাবে। বাংলাদেশ ট্রানজিট হিসেবে কাজ করবে। তাতে যেমন লগ্নি হবে তেমন কর্মসংস্থানও হবে। বাংলাদেশের রাজস্বও বাড়বে। হিন্দুস্তান টাইমস ‘ইন্ডিয়াস বেস্ট পার্টনারশিপ ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে বলেছে, নয়াদিল্লির এনআরসি নিয়ে বাংলাদেশের যাবতীয় শঙ্কা দূর করা প্রয়োজন। বলা হয়েছে, উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক সোনালি অধ্যায় হলেও এনআরসি এবং তিস্তা পানি চুক্তি না হওয়াটা একটা সংশয় তৈরি করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হার আট শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে চলেছে। ওই দেশটি ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের পক্ষে এক আদর্শ স্থান। অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় লেখা হয়েছে সংশয়ের বিষয়গুলো দূর করা না হলে অচিরেই ‘সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পর্ক’ অংকুরেই বিনষ্ট হবে। টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকা ভারত সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে, ‘এনআরসি ভুলে যান, বাংলাদেশের আর্থিক উন্নতি থেকে শিক্ষা নিন।’ সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, এতদিন ভারতের পররাষ্ট্রনীতি কেবলমাত্র পাকিস্তানকেন্দ্রিক ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ধীরে ধীরে পাকিস্তানকে উন্নয়নের মাপকাঠিতে পেছনে ফেলেছে। বাংলাদেশ এখন আর দুর্ভিক্ষপীড়িত গরিব দেশ নয়। বরং দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র। তাই এখন এনআরসি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ এখন কোনো ইস্যু নয়। বরং ভারতের শেখা উচিত বাংলাদেশকে দেখে। দ্য হিন্দু এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একই সুরে মন্তব্য করেছে। ফলে ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে সহমত তৈরি হয়েছে। কূটনীতিকদের মতে, এটাই শেখ হাসিনার কৃতিত্ব।
শিরোনাম
- সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
- ইলিশের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো যাবে না : মৎস্য উপদেষ্টা
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারে শুরু জুলাইয়ে
- ‘ভারতের অন্যায় আবদারের কাছে আমরা মাথানত করবো না’
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : নায়াব ইউসুফ
- চাঁদা আদায় বন্ধের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
- রায় মেনে ভারতকে সিন্ধু পানি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানাল পাকিস্তান
- ভোটকেন্দ্র নীতিমালার গেজেট প্রকাশ, ডিসি-এসপির কমিটি ও ইভিএম বাদ
- গাজা যুদ্ধে সেনা হতাহতের সংখ্যা জানাল ইসরায়েল
- সাজা মওকুফ হওয়ায় মুক্তি পেলেন যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ১৩ আসামি
- মঙ্গলবার থেকে আমদানি-রফতানির সব সনদ অনলাইনে জমা বাধ্যতামূলক
- ‘জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে দ্রুত সময়ে নির্বাচনের ঘোষণা সরকার’
- এবার নিউইয়র্কের তহবিল বন্ধের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
- স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘মমতা’ প্রকল্প বন্ধের খবরে দুশ্চিন্তায় চরাঞ্চলের প্রসূতিরা
- ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছে সরকার
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
- বিএম কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা
- আমেরিকায় যেভাবে ভয়ানক আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘লাফিং গ্যাস’
- দল নিবন্ধন : আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে ইসির ৭ কর্মকর্তা
- বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মতবিনিময় সভা
ভারতের গণমাধ্যমে আহ্বান
অবিলম্বে তিস্তা চুক্তি করুন, বন্ধ করতে হবে এনআরসি
নয়াদিল্লি প্রতিনিধি
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর