শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বললেন ওবায়দুল কাদের

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় শৃঙ্খলা বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। দল করলে দলীয় শৃঙ্খলা মানতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তিনি যত বড় নেতাই হন না কেন, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

গতকাল জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১০টায় আক্কেলপুর মুজিবুর রহমান (এমআর) ডিগ্রি সরকারি কলেজ মাঠে এ সম্মেলন শুরু হয়। জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান ওরফে রকেট সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকছেদ আলী মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলের মধ্যে যারা অপকর্ম, অনিয়ম-দুর্নীতি করছে, আমাদের নেত্রী কাউকেই ছাড় দিচ্ছেন না। আওয়ামী লীগের জনপ্রতিধিরাও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। এখানে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে বলে দেওয়া হয়েছে, সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। কে কার, কোন পরিচয়ের তা দেখা হবে না। যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করবে, প্রশাসনিক ও সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘কোম্পানীগঞ্জে কিছুদিন ধরে যে বিশৃঙ্খলা চলছিল, সেই বিশৃঙ্খলার ব্যাপারেও সরকার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। সেখানে অভিযান শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা জড়িত, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাংগঠনিক তদন্ত চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে অচিরেই সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

জনগণের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ভালো আচরণ করার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা যদি জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ না করি, তাহলে শেখ হাসিনার সব উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। জনগণই আমাদের শক্তি। কাজেই জনগণকে জিম্মি করে কোনো কর্মসূচি দেবেন না। বিতর্কিত ব্যক্তি দলে টেনে ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষিত করবেন না। সুসময়ে যারা দলে আসছেন, তারা বসন্তের কোকিল। দলের দুঃসময়ে এই বসন্তের কোকিলদের দেখা যাবে না।’ তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে তিনি তার ভূমিকা নিজেই মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসন করেছিলেন। রক্তের মূল্যে অর্জিত স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। দিয়েছিলেন ক্ষমতার স্বাদ। মুক্তিযুদ্ধে একজন সেক্টর কমান্ডারের এমন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি প্রসার নীতিতে ইতিহাস নিজেই তাকে কাঠগড়ার দাঁড় করিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাতে বিএনপি সিদ্ধহস্ত। তারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে জনগণ ও পুলিশকে দাঁড় করিয়েছে। নির্বাচনে জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে নির্বাচনকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। তারা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাহলে বিএনপি বিভিন্ন পৌরসভায় জয়ী হয় কীভাবে! বিএনপি অব্যাহত ব্যর্থতা আর ক্ষমতার রাজনীতি থেকে ছিটকে দিশাহারা হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর