শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
এক দিনে আরও ১৭০ জন হাসপাতালে

ভয় বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু

চিকিৎসার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ, মিটফোর্ড, মিরপুরের লালকুঠি, রেলওয়ে হাসপাতাল ও টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল নির্ধারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভয় বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু

করোনা মহামারীর মধ্যেই রাজধানীতে ভয় বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু। এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকাতেই রোগীর সংখ্যা ১৬৪ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের এ হিসাব বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত। ঢাকার বাইরে ছয়জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে পাঁচ ও যশোর জেলায় একজন। চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে সরকারি হিসাবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৪৬২ জন।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হবে। জানা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৭০৯ জন। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এ সংখ্যা ৬৭৯। অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন ৩০ জন। সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৭ জন ভর্তি এসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতালে। এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে সন্দেহে চারজনের তথ্য পর্যালোচনা করছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।

দুই দশকের বেশি সময় ধরে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চললেও ২০১৯ সালে ঢাকায় ব্যাপকভাবে এ রোগ ছড়ায়। সে সময় সরকারি হিসেবে দেশে লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত ও দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর সমালোচনার মুখে দুই বছর ঢাকায় মশকনিধনে ব্যাপক কার্যক্রম চালায় দুই সিটি করপোরেশন। এবার করোনা মহামারীর মধ্যে আবার সেই ডেঙ্গু নতুন দুশ্চিন্তা হয়ে দেখা দিয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। নন কভিড রোগীর চিকিৎসা, করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, টেস্ট, টিকা সব মিলিয়ে একসঙ্গে করতে হচ্ছে। তাই আমরা বেশ কয়েকটি হাসপাতাল চিহ্নিত করেছি, যেখানে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেব। কারণ, যেখানে করোনা রোগীর চিকিৎসা হয়, সেখানে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।’ 

কভিড-১৯ মহামারীকালে জনগণকে দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু নিয়ে অবহেলা না করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক ব্যাধিনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার অ্যান্টিজেন কিটের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে এ পরীক্ষাটি বিনামূল্যে করার সুযোগ রয়েছে। ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে বিলম্ব না করে সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করার অনুরোধ জানান তিনি।

ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-৩) আবদুল্লাহ আল বাকী বলেন, ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে এডিস মশার লার্ভা নিধনে আমরা নিয়মিত কর্মসূচির পাশাপাশি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করি। আগের তুলনায় নাগরিক সচেতনতা অনেক বেড়েছে। বাসাবাড়িতে এডিসের লার্ভা খুব একটা পাওয়া যায় না। কিন্তু নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার উপস্থিতি অনেক বেশি পাওয়া যায়। এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা কর্মী পাঠিয়ে এসব জায়গায় স্প্রে করছি। সব প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মীদের সচেতন হওয়া জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর