২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটকে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর প্রতি অগ্রাধিকারহীন বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেট নিয়ে অত্যন্ত প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এটা অনেক ক্ষেত্রে হতাশার বাজেটে পরিণত হয়েছে। এটা জুলাই চেতনার সঙ্গে সম্পূরক বাজেট হয়নি। এটা সাম্যবিরোধী ও ভুলভ্রান্তির বাজেট।’ গতকাল রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ : অবহেলিতরা কী পেয়েছে’ শীর্ষক বহুপক্ষীয় অংশীজন বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, অর্থনীতিবিদ জিয়া আহসান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক, বিজিএমইএর নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, আইসিএমএবির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, বাসদ সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, নিউ এজ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের ভিতর দিয়ে এ সরকার এসেছে। বৈষম্যবিরোধী চেতনার মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছিল। গতানুগতিক বাজেট থেকে ভিন্ন কিছু হবে এ রকম বড় প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।’ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এবারের বাজেটে আমরা একটি সুযোগ হারিয়েছি। গতানুগতিক একটা বাজেট হওয়ায় আমরা দুর্বল হয়ে গেলাম।’ সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘বাজেট বক্তৃতায় যে ১১টি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সেখানে শ্রমিক নেই। অথচ দেশে ৮ কোটি শ্রমজীবী মানুষ। শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে কোনো দিন বাজেট বরাদ্দ হয়নি। উপেক্ষা করা হয়েছে শ্রমিকদের।’ ড. মাহদী আমিন বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিল বাজেটে সবার প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কিন্তু সেটা হয়নি। ১৬ বছর ধরে যেসব বাজেট দেওয়া হয়েছে, এটা তারই ধারাবাহিকতা মনে হয়েছে। নতুন কোনো কিছু দেখতে পাওয়া যায়নি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বাজেট বাড়েনি। বরং অনেক ক্ষেত্রে কমেছে।’ সামান্তা শারমিন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষাগুলো ছিল তার প্রতিফলন আমরা বাজেটে দেখতে পাইনি। বাংলাদেশে পিছিয়ে পড়া ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেখানেই মনোযোগ দিতে হবে। বাজেটে সেটা দেখা যায়নি।’