শিরোনাম
শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

হোটেলে ঢোকার পাঁচ ঘণ্টা পর হত্যা নারী চিকিৎসককে

নিজস্ব প্রতিবেদক

হোটেলে ঢোকার পাঁচ ঘণ্টা পর হত্যা নারী চিকিৎসককে

জান্নাতুল নাঈম সিদ্দীক

রাজধানীর পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামে আবাসিক হোটেল থেকে নারী চিকিৎসকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম ডা. জান্নাতুল নাঈম সিদ্দীক (২৭)। পরিবার তার প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় প্রেমিক তাকে হত্যা করতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হোটেলে ঢোকার ঘণ্টা পাঁচেক পরই হত্যার শিকার হন তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামি সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজাকে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

এর আগে দুপুর ১টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা শফিকুল আলম বাদী হয়ে জান্নাতুলের ‘বয়ফ্রেন্ড’ রেজাউল করিম ও অজ্ঞাত আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেছেন। সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজার সঙ্গে ওই নারী চিকিৎসকের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কী কারণে হত্যা করা হলো সে বিষয় এখনো পরিষ্কার না। ধারণা করা হচ্ছে প্রেমের সম্পর্কের পর মেয়ের পরিবার তাদের বিয়েতে রাজি হচ্ছিল না। জানা গেছে, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রেজা বর্তমানে বেকার। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শাহেন শাহ মাহমুদ জানান, রেজা গ্রেফতার হলে হত্যার কারণ জানা যাবে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ওই নারী চিকিৎসকের লাশ উদ্ধারের পর তা ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। গতকাল পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ডা. জান্নাতুল রাজধানীর মগবাজারের কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। ঢামেকে তিনি স্ত্রী ও গাইনি বিষয়ে এক বছরের একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বুধবার সকালে তিনি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই আবাসিক হোটেলে রেজাউল করিম রেজা নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে উঠেছিলেন। রাতে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে হোটেলটির চতুর্থ তলার ৩০৫ নম্বর কক্ষের বিছানার ওপর থেকে ছুরিকাহত ও গলা কাটা অবস্থায় ডা. জান্নাতুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। গতকাল কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে রেজাউল নামে সেই ব্যক্তি পলাতক। হোটেলের ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। ডা. জান্নাতুলের বাবা অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক শফিকুল আলম বলেন, আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। বুধবার সকাল ৮টার দিকে ক্লাসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় জান্নাতুল। সকাল ১০টার দিকে বাসায় ফিরবে বলে জানায়। বাসায় না ফেরায় ১১টার দিকে তার ফোনে কল করা হয়। কিন্তু ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে পুলিশের মাধ্যমে জান্নাতুলের মৃত্যু সংবাদ পাই। মেয়ে একদিন রেজার সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছিল তার সঙ্গে। বলেছিল তার বন্ধু হয়। তার বাড়ি কক্সবাজার। গাজীপুরের জয়দেবপুরে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আছে বলে জানিয়েছিল। এর বেশি কিছু আর শুনিনি। জানা গেছে, তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিল জান্নাতুল। তাদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদির মনোহরদি উপজেলার চন্দনবাড়িতে। রাজারবাগ ২ নম্বর মোমেনবাগে দোলনচাপা ভবনে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। লাশের সুরতহালে কলাবাগান থানার এসআই নার্গিস আক্তার উল্লেখ করেছেন, ওই নারী চিকিৎসকের থুঁতনিতে, ঠোঁটে, গলায় সাড়ে ৮ ইঞ্চি, বাম কাঁধে দেড় ইঞ্চি, দুই বৃদ্ধাঙুলিতে, বুকের মাঝখানে, পেটে ছয়টা কাটা জখম রয়েছে। এ ছাড়া তার পিঠে একটি, বাম পায়ের হাঁটুর ওপরে ছিলা ও হাঁটুর নিচে কাটা জখম রয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর