দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ যুক্তরাজ্যভিত্তিক অর্থ ও ব্যবসা বিষয়ক সাময়িকী ‘দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক্স’-এর বিবেচনায় চলতি বছর ‘বেস্ট সিএসআর (করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি) কনগ্লোমারেট গ্রুপ’ নির্বাচিত হয়েছে। অতি সম্প্রতি দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক্স এ তালিকা প্রকাশ করেছে। গ্রাম বাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করা, কভিডকালীন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অসহায়দের মধ্যে শীতবস্ত্র ও খাদ্য বিতরণ, বিনামূল্যে চক্ষুসহ নানাবিধ চিকিৎসাসেবা প্রদান, সুবিধাবঞ্চিত ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুদের পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের সেরা সিএসআর কনগ্লোমারেট গ্রুপ হিসেবে এ পুরস্কার লাভ করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। পুরস্কার প্রাপ্তির পর গতকাল বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়- বসুন্ধরা গ্রুপের স্লোগানই হলো ‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’ কাজ করা। গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের দৃঢ় মনোবল, মেধা ও মননের সমন্বয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ সফলতার সঙ্গে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে এবং দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিস্তৃত হয়েছে। এর ফলে মিলছে একের পর এক আন্তর্জাতিক পুরস্কার। দেশের বাণিজ্য ও ব্যবসার অগ্রগতিতে অসামান্য অবদানের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ‘বেস্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড, ২০২১’ প্রদান করেছিল ‘দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক্স’। এর আগেও বসুন্ধরা গ্রুপ এবং এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো ও নানা ব্র্যান্ড তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। সিএসআর কার্যক্রম প্রসঙ্গে গ্রুপটির পক্ষ থেকে জানানো হয়- নানাবিধ ব্যবসা সফল উদ্যোগের দ্বারা দেশের জিডিপিতে প্রত্যক্ষভাবে অবদান রাখার পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপ গ্রাম বাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়নেও প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করতে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ফ্রি-ফ্রাইডে ক্লিনিক বা ফ্রি-আই ক্যাম্প ও বসুন্ধরা আই হাসপাতালের মাধ্যমে বিনামূল্যে দরিদ্রদের চক্ষু চিকিৎসা দিচ্ছে। বসুন্ধরা আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মাধ্যমে নামমাত্র খরচে মহিলা, শিশুসহ অসহায়দের বড় ও জটিল চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের যোগ্যতম মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে উপযুক্ত পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছে। দেশের দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের শিশুদের হৃদরোগ, ব্যয়বহুল ক্যান্সারের চিকিৎসা সহায়তা কিংবা সিআরপিতে সরাসরি অর্থ সাহায্যে বসুন্ধরা গ্রুপের নাম আসে সবার আগে। মানিকগঞ্জে অলাভজনক হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন আছে। মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া মেধাবীদের বৃত্তিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অর্থ বৃত্তির ব্যবস্থা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্কুলে কম্পিউটারসহ নানা শিক্ষা সরঞ্জাম প্রদান, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির অফিস নির্মাণের জন্য জমি প্রদান ইত্যাদি বসুন্ধরা গ্রুপের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ। বহুল আলোচিত নিউমার্কেট সংঘর্ষে নিহত নাহিদ ও মুরসালিনের পরিবারকে নগদ অর্থ সাহায্য দিয়ে পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপ। এ ছাড়া দেশে অনাকাক্সিক্ষত বা দুর্ঘটনাকবলিত অসহায় পরিবারকে সার্বিক সহায়তা দিয়ে পাশে থাকে বসুন্ধরা। কভিড দুর্যোগের সময় বসুন্ধরা গ্রুপ একক তত্ত্বাবধানে দেশব্যাপী মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপ কভিডে সম্মুখযোদ্ধাদের বিশেষ করে পুলিশ, র্যাব, আর্মি, ডাক্তারদের বিনামূল্যে ওষুধ ও মাস্ক বিতরণ করেছিল। করোনা মোকাবিলায় আইসিসিবিতে অস্থায়ীভাবে বিশাল হাসপাতালের জন্য সরকারকে বিনামূল্যে জায়গা প্রদান করেছিল। বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ। এ ছাড়া খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে যুবসমাজকে মাদকাসক্তি থেকে দূরে রাখতেও কাজ করে যাচ্ছে গ্রুপটি। বসুন্ধরা কিংস বাংলাদেশের একটি প্রথম সারির চ্যাম্পিয়ন ফুটবল টিম। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ।
