মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
এসএসসি পরীক্ষার ফল

কমেছে পাস হার, বেড়েছে জিপিএ-৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

কমেছে পাস হার, বেড়েছে জিপিএ-৫

ভিকারুননিসা স্কুলে গতকাল শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উল্লাস -জয়ীতা রায়

দেশে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার গতবারের চেয়ে কমেছে। তবে বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ বছর গড় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের বছর এ হার ছিল ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। গতকাল সকালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৬ হাজার ২৬২ জন। এ বছরে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। গতকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের এসব তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী জানান, সাধারণ ৯ বোর্ডে পাসের হার ৮৮.১০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬৩ জন। দাখিলে পাসের হার ৮২.২২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৪৫৭ জন। কারিগরিতে পাসের হার ৮৪.০৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৬৫৫ জন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর অনুষ্ঠিত হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এসএসসিতে যশোর শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার সবচেয়ে বেশি, ৯৫.০৩ শতাংশ। পাসের হার সবচেয়ে কম সিলেটে, ৭৮.৮২ শতাংশ। বাকি শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯০.০৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮৬.০৭ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৫.৮৮ শতাংশ, কুমিল্লায় ৯১.২৮ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮৭.৫৩ শতাংশ, বরিশালে ৮৯.৬১ শতাংশ, দিনাজপুরে ৮১.১৪ শতাংশ। এ ছাড়া দেশের বাইরের ৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৩৬৩ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৪৮ জন। বিদেশের কেন্দ্রগুলোতে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

এ বছর ২৯ হাজার ৬৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব পরীক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর ৫ হাজার ৪৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। অর্থাৎ এ বছর শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ২ হাজার ৫১৯টি। অন্যদিকে ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী এবার পাস করতে পারেনি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৮। এ ক্ষেত্রেও গতবারের চেয়ে এবারে ফল খারাপ হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৫৮তম দিনে ফল প্রকাশ করা হলো। প্রতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়ে থাকলেও গত দুই বছর ধরে করোনার কারণে যথাসময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি।

দেশসেরা যশোর বোর্ড : এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হারে দেশসেরা সাফল্য অর্জন করেছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তিও গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্য দিয়ে এই বোর্ডের ফলাফল অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এ বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩০ হাজার ৮৯২ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৬ হাজার ৪৬১ জন। এর আগে ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

৫০ স্কুলে সবাই ফেল : এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ২ হাজার ৯৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। আর ৫০ বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গত বছর এই শূন্য পাস করা স্কুলের সংখ্যা ছিল ১৮টি।

 

সর্বশেষ খবর