শিরোনাম
শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
মাঠের রাজনীতিতে দুই দল

শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে তৃণমূলে যাবেন নেতারা

রফিকুল ইসলাম রনি

শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে তৃণমূলে যাবেন নেতারা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল গোছাতে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ। সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন প্রচারে জোর দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য তিনি কেন্দ্রীয় নেতা, দলীয় সংসদ সদস্যদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। দলীয় প্রধানের বার্তা নিয়ে তৃণমূলে ছুটে চলছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে সরকারের উন্নয়ন প্রচার-বিএনপি জামায়াতের দুঃশাসনের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য দলীয় এমপিদের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগেও গত শনিবার আওয়ামী লীগের প্রথম যৌথ সভায় দলীয় নেতা-কর্মীদের গাইডলাইন     দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতারা এখন নিজ নিজ এলাকায় ছুটে গেছেন। কেউ কেউ নিয়েছেন স্থানীয় নেতাদের সংবর্ধনা, কেউ কেউ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের জেলা-উপজেলায় বর্ধিত সভা, কর্মিসভা শুরু করেছেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এখন তৃণমূলে যাচ্ছেন। তারা অভ্যন্তরীণ ছোটখাটো সংকট স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জনগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরছেন। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে কী কী করেছিল সেগুলো জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তারা বলছেন, দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের পর প্রথম যৌথ সভায় দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আজ শনিবার আবারও মুলতবি যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে গণভবনে। সেখানেও দিকনির্দেশনা দেবেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র এক বছর বাকি। এই নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের উন্নয়ন এবং বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন তুলে ধরতে বলেছেন। আমরা সে নির্দেশনাই টিমগতভাবে বাস্তবায়ন করব। পাশাপাশি দলের ছোটখাটো সমস্যা থাকলে সেগুলো সমাধান করব। সব মিলিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করা, জনগণকে উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগকে আবারও ভোট প্রদানের আহ্বানই থাকবে আমাদের মূল কর্মসূচি।

দলীয় সূত্রমতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক চ্যালেঞ্জ মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচন আলাদা হবে। বিগত তিনটি নির্বাচনে টানা ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করলেও কিছু কিছু কাজে দলের ইমেজ ক্ষুণœ করছে। আগামী নির্বাচনও বর্তমান সরকারের অধীনে হলে যেন কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে সে জন্য কাজ শুরু করেছে ক্ষমতাসীনরা। এ জন্য জনগণের কাছে যাচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। আগামীতে নৌকায় ভোট চাওয়ার পাশাপাশি মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন জামায়াত-বিএনপির দুঃশাসন ও সেই সময়ের দেশের চিত্র।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নতুন বছরে আমাদের কর্মসূচি হচ্ছে, জেলা-উপজেলায় কর্মিসভা, বর্ধিত সভা, যৌথ সভা করা। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ বছর আওয়ামী লীগ সরকার যেসব উন্নয়ন করেছে, সেগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরব। পথসভা, লিফলেট বিতরণ, জনসভা করব। প্রয়োজনে ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন-অর্জন তুলে ধরব। অন্যদিকে বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে কী কী করেছে, তারা আগুনসন্ত্রাস করে কীভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে সেগুলো জনগণকে মনে করিয়ে দেব।’ 

গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিদের এলাকামুখী হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। একই সঙ্গে সরকারের অর্জনগুলো তুলে ধরতে বলেছেন। তিনি দলীয় এমপিদের উদ্দেশে বলেন, জরিপ চলছে। যারা এলাকায় যাবে না, তাদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের উন্নয়ন প্রচার ও সরকারবিরোধীদের অপপ্রচারের জবাব দিতে বলেছেন। একই সঙ্গে যারা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ করতে চেয়েছিল তাদের মুখোশ জাতির সামনে পরিষ্কার করতে বলেছেন। আমরা সেই কাজটিই করব।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকারের যে কোনো নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কারণ নির্বাচনে জনগণের সমর্থনই আওয়ামী লীগের শক্তি, জননেত্রী শেখ হাসিনার শক্তি। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঠপর্যায়ে আরও যুক্ত করা, দলের ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা এবং নানামুখী সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করাই আমাদের লক্ষ্য।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর