শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণই বড় চ্যালেঞ্জ

রমজান উপলক্ষে মাঠ প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ মন্ত্রিপরিষদের, ডিসিদের বিশেষ নির্দেশনা বিভাগীয় কমিশনারদের, জেলা-উপজেলায় মনিটরিং কমিটি জেলা প্রশাসনের

আকতারুজ্জামান

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণই বড় চ্যালেঞ্জ

পবিত্র মাহে রমজান ঘিরে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়বে না। বাস্তবে থেমে নেই পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। দিনে দিনে দাম বাড়ায় নাভিশ্বাস ক্রেতা সাধারণের। সবমিলিয়ে রোজা সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখাই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠপ্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিভাগীয় কমিশনাররা জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) দিয়েছেন বিশেষ নির্দেশনা। আর সে অনুযায়ী জেলা ও উপজেলায় বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করছে জেলা প্রশাসন। সরেজমিন গিয়ে বাজারে দেখা গেছে, মাংসের দাম নতুন করে না বাড়লেও মাছের বাজারে রমজানের প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন সবজির দামও চড়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে রমজানকেন্দ্রিক পণ্যের দামও। ছোলা, বেসন ও খেসারি ডালের দাম এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। আর ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কেজিতে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। রমজানের আগে লেবুর দাম হঠাৎই প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে পুরো রমজানেই রোজাদারদের তৃষ্ণা মেটাতে অতিরিক্ত দামে লেবু কিনতে হতে পারে। এ ছাড়া এক মাস আগে বেড়ে যাওয়া মুরগির দামে আরও বাড়তিভাব লক্ষ্য করা গেছে। ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। ফলে বাড়তি দামেই জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে বিশেষ অভিযান পরিচালনার কথা থাকলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসূত্রে জানা গেছে, রমজান সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম যেন না বাড়ে এ জন্য মাঠ প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বাজার মনিটরিং নিয়ে বৈঠক করেছেন। একটি বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাজার নিয়ে কেউ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ ঘোষ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে যেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও কোনো ভেজাল মেশানো না হয় তা তদারকি করা হচ্ছে। ভোক্তা, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছি। এ ছাড়াও রমজান মাস সামনে রেখে বাজার মনিটরিং করতে জেলা ও উপজেলায় শিগগিরই কমিটি করা হবে। সেই কমিটি পুরো রমজান মাসে বাজার তদারকি করবে। পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি ও ভেজাল রোধে অভিযান চালাবে।’ রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, রোজার মাস সামনে রেখে যেন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি না হয় সে ব্যাপারে বিভাগের সব জেলা প্রশাসক ইতোমধ্যে বৈঠক করেছেন। বৃহস্পতিবার আমি নিজেও কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছি। ভোক্তা, ব্যবসায়ী ছাড়াও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের কাছ থেকে তাদের বক্তব্য শুনেছি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে দোকানে মূল্য তালিকা টানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাজার মনিটরিং করতে জেলা প্রশাসনকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত ছাড়াও মূল্য বৃদ্ধি এবং ভেজাল রোধে বিভিন্ন অভিযান অব্যাহত রাখা হবে। বাজার নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানোসহ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর