ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় অবিলম্বে বন্ধ করতে দিল্লিকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের রাজধানী দিল্লি ও কলকাতায় বাংলাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অফিস স্থাপনের খবর বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কর্তৃক ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপের অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটেছে। মানবতাবিরোধী গুরুতর অপরাধের কারণে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলায় পলাতক থাকা আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা এখন ভারতীয় ভূখণ্ডে রয়েছেন। গত ২১ জুলাই সন্ধ্যায় একটি এনজিওর আড়ালে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটির কয়েকজন সিনিয়র নেতা দিল্লি প্রেস ক্লাবে জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগের লক্ষ্যে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের সদস্যদের মধ্যে পুস্তিকা বিতরণ করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন ভারতের মাটিতে এ দলের ক্রমবর্ধমান তৎপরতার কথা নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের মাটিতে অবস্থান করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের পলাতক নেতা-কর্মীদের বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো, বিশেষ করে অবৈধভাবে অফিস স্থাপনসহ যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যকলাপ বাংলাদেশের জনগণ এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবমাননা। এ ঘটনা পারস্পরিক বিশ্বাস এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে পরিচালিত ভারতের সঙ্গে সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখার ঝুঁকিও বহন করে এবং বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক রূপান্তরের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলে। এটি বাংলাদেশে জনসাধারণের মধ্যে নেতিবাচক অনুভূতির (পাবলিক সেন্টিমেন্ট) উদ্রেক করতে পারে, যা দুই নিকটতম প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নত করার জন্য উভয় দেশের চলমান প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে অনুরোধ করছে, বাংলাদেশি কোনো নাগরিক দ্বারা ভারতের মাটিতে যেন বাংলাদেশবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালিত না হতে পারে তা নিশ্চিতে তারা পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এ ছাড়া অবিলম্বে ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধ করবে।
ভারত খণ্ডন করল বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতি : ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত থেকে বাংলাদেশবিরোধী কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয় জানা নেই। গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লিতে নিয়মিত প্রেসব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ভারতের আইনবিরোধী আওয়ামী লীগ কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছে বলে জানা নেই। বাংলাদেশ সরকারের এ প্রেস বিবৃতি বাস্তবতা রহিত। ভারত সরকার কোনো দেশের বিরুদ্ধে বিরোধী কাজকর্মে প্রশ্রয় দেয় না। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল বলেন, ভারত সরকার পুনরায় আশা প্রকাশ করছে বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচন হবে। যাতে মানুষের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়।