অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘প্রতিশ্রুত ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) যদি নতুন বা কঠিন কোনো শর্ত আরোপ করে তাহলে সরকার দ্বিতীয়বার ভাববে ঋণ নেবে কি না। বরং আমরা বিকল্প উৎস নিয়ে চিন্তা করব, কারণ আমাদের অর্থনীতি আগের থেকে অনেক স্থিতিশীল।’ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের শুরু হওয়া বার্ষিক সভার দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। একই দিনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি মৃদু পুনরুদ্ধারের দিকে এগোচ্ছে। সংস্থাটি বলেছে, ধীরগতির অর্থনীতি আগামী অর্থবছরে কিছুটা গতি পেতে পারে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা আগের অর্থবছরের ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আইএমএফের নতুন কোনো শর্ত আরোপ বা কঠোর হিসাব নির্ধারণ করা হলে সরকার তা পুনর্বিবেচনা করবে। বাজেট সহায়তা নেওয়া হবে কি না তা এখনো চূড়ান্ত নয়। তবে আইএমএফের শর্তসমূহ যদি দেশের জন্য অনুকূল না হয়, তাহলে সরকার বিকল্প উৎস থেকে সহায়তা নেওয়ার দিকেই নজর দেবে। আমরা এখন চেষ্টা করছি বিকল্প বাজেট সহায়তার ব্যবস্থা করতে। এডিবি, এআইআইবির মতো সংস্থাগুলোর সহযোগিতা নেওয়ার সুযোগ আছে।’ অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, সরকার ব্যাংকিং খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে, যা উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। সংস্কার কার্যক্রম এখনো চলমান এবং রেগুলেটরি কাঠামো আরও শক্তিশালী করতে কিছু সময় লাগবে। সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং পরবর্তী সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দিকনির্দেশনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নতুন প্রজন্ম যেন এসব সংস্কারের সুফল পায়, সেদিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির ইতিবাচক রূপান্তর এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃশ্যমান। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দুটি নতুন প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে, যা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। চলমান স্থিতিশীলতা ও সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আগামী বছরগুলোয় আরও ভালো হবে।’