বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গণহত্যা চালানোর অভিযোগের দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে আইনগতভাবে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গতকাল দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সম্ভাব্য প্রধান অপরাধী দেশ থেকে পালিয়েছেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি প্রক্রিয়া আমরা শুরু করব। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে ২০১৩ সালে। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে এ চুক্তিটি হয়েছিল। তিনি যেহেতু বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি হবেন বলে মনে করি এবং অধিকাংশ মামলায় তাকে যেহেতু আসামি করা হয়েছে, সেহেতু প্রক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে তাকে আইনগতভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করব। নিজের চ্যালেঞ্জ এবং কাজ সম্পর্কে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, প্রথমত এভিডেন্স কালেক্ট করা। অপরাধের যে আলামত সেগুলো সংগ্রহ করে কম্পাইল করা, এটা একটা চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- আসামিরা এখনো পলাতক, প্রধান আসামি দেশত্যাগ করেছেন। অনেকে দেশত্যাগের চেষ্টায় আছেন। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা। গণহত্যার আলামতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে, আলমতগুলো দ্রুত সংরক্ষণ করা, প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার হাতে নিয়ে আসা। যেন এ আলামতগুলো আদালতের সামনে উপস্থাপন করতে পারি। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এটা এমন একটা বিচার হবে যে, বিচারের পরে শহীদ পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, বাদীপক্ষসহ আসামি পক্ষও মনে করবে তাদের প্রতি ন্যায় বিচার করা হয়েছে। আসামিদের প্রতি জুলুম করা হবে না আবার ছাড়ও দেওয়া হবে না। আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, এ অপরাধগুলোর মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে, তদন্তকালে আসামিদের গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন হবে। নিশ্চয়ই আমরা অপরাধীদের গ্রেপ্তার চাইব। আমাদের প্রথম চেষ্টা থাকবে যারা সম্ভাব্য অপরাধী তারা যাতে আদালতের জুরিকিডিকশনের বাইরে চলে যেতে না পারেন। সেটা ঠেকানোর চেষ্টা থাকবে। আইন সংশোধনের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা মাত্র দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আমরা সরকারের সঙ্গে বসে এগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেব।