রাজধানীর হাজারীবাগ সেকশন এলাকায় সজল রাজবংশী (৩৫) নামে এক জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে গুলি করে ৫০ ভরি সোনা ও নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে গতকাল কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করা হয়েছে।
আহত সজল রাজবংশী কামরাঙ্গীরচরে ‘ইতি জুয়েলার্স’ নামে একটি সোনার দোকানের মালিক। দীর্ঘ ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তার বাসা হাজারীবাগ সেকশন বেড়িবাঁধ এলাকায়।
আহত সজলের ভাই জয় রাজবংশী জানান, বৃহস্পতিবার রাতে দোকান বন্ধ করে তার ভাই মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফিরছিলেন। পথে হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় একাধিক মোটরসাইকেলে ৭-৮ জন দুর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে। তারা সজলের বাঁ পায়ে গুলি করে এবং কাঁধে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। ব্যাগটিতে ৫০ ভরি সোনা এবং নগদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল। স্থানীয়রা সজলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
এদিকে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে দিনদুপুরে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আব্বাস উদ্দিন (২৭) নামের আরও একজন গুলিবিদ্ধ হন। গতকাল নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আছাদ আলী মাতব্বর পাড়ায় জুমার নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যাওয়ার পথে তাকে হত্যা করা হয়। এ সময় মসজিদে খুতবা চলছিল।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম রাউজান নোয়াপাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিরামিষ পাড়ার আবু ছৈয়দ মেম্বারের ছেলে। নগরের আছাদগঞ্জে মেসার্স জাহাঙ্গীর ট্রেডার্স নামে তার শুঁটকির আড়ত আছে এবং তিনি নোয়াপাড়া মাকসুদ কমিউনিটি সেন্টারের মালিক। গুলিবিদ্ধ আব্বাস উদ্দিন নিহত জাহাঙ্গীরের ভাগিনা এবং মাকসুদ কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার। আব্বাস বর্তমানে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। জাহাঙ্গীর আলম বৃহস্পতিবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। তিনি পরিবার নিয়ে নগরীতে বসবাস করতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর গতকাল মোটরসাইকেলে তার ভাগিনা আব্বাস উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে নিজ গ্রামে জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। তিনি স্থানীয় আছাদ আলী মাতবর বাড়ির জামে মসজিদের সামনে গেলে কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে এসে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। প্রথমে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয় এবং পরে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ সময় জাহাঙ্গীরকে রক্ষা করতে মুসল্লিরা এগিয়ে এলে কয়েকজন হামলার মুখে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন। জাহাঙ্গীরের মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলের পাশে কয়েকটি কার্তুজ পড়ে ছিল বলে জানা যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ রাসেল বলেন, শুক্রবার দুপুরে রাউজানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হন। ঘটনার পরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে। এ ব্যাপারে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। নিহতের লাশ বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারে হস্তান্তর করা হবে।