শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঈদ-পরবর্তী স্বাস্থ্য পরিচর্যা

ঈদ-পরবর্তী স্বাস্থ্য পরিচর্যা

ব্যস্ততা, বেড়ানো ও উপভোগ- এসবেই ঈদ আনন্দ শেষ হলো। এখন সময় আবার নতুন করে স্বাভাবিক অভ্যাস, রীতিনীতিতে ফিরে যাওয়ার। ঈদুল আজহায় ঐতিহ্যগতভাবেই ভালো ভালো খাবারের প্রতি ঝোঁক বেড়েছিল, অধিক চর্বি জাতীয় খাবার, অধিক ক্যালরিসম্পন্ন খাবার খাওয়া হয়েছিল বেশি।  প্রায় ক্ষেত্রেই খাবারের মাধ্যমে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ আগের তুলনায় হয়তো বেড়ে গিয়েছিল, এটাই স্বাভাবিক। ঈদের খাবারকে মুখরোচক করতে গিয়ে নানা রকম ঘি ও মসলা ব্যবহার করা হয়। আর এতেই খাবারে কোলেস্টেরলের মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এছাড়া যেখানেই যাবেন একটু একটু করে খান। দিনে চারবারের পরিবর্তে ছয়বার খান। যেমন সারা দিনে ২০০০ ক্যালরি খাওয়ার কথা থাকলে প্রতিবার ৪০০ ক্যালরি করে ৫ বার খাবেন। দুপুরে হালকা কিছু খেয়ে বিকালে খেতে পারেন ফ্রুটস সালাদ বা খোসাসহ দু’একটি ফল। ফলের রস না গোটা ফলই বেশি উপকারী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে বেশ কিছু অসুস্থতার যোগসূত্র রয়েছে, যেমন-মাইওকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (হার্ট অ্যাটাক), ব্রেন স্ট্রোক ও পেরিফেরাল ভাসকুলার ডিজিজ। কোলেস্টেরলের মাত্রার বৃদ্ধি ঘটলে, বৃদ্ধির সঙ্গে আনুপাতিক হারে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।  ঈদের এই সময়টা খাবার ও জীবনযাত্রা পরিবর্তনের ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের রোগীদের সমস্যা বা জটিলতা বেড়ে যেতে পারে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওষুধের পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের রোগীদের জটিলতা প্রশমনে এ সময় হƒদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। যারা নিয়মিত হাঁটতেন, ব্যায়াম করতেন, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন কিন্তু ঈদে তা বজায় রাখতে পারেননি, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবার পুরনো অভ্যাসে ফিরে যেতে শুরু করুন। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধীরে ধীরে চালু করা উচিত। হাঁটতে, ব্যায়াম করতে যদি কোনো অসুবিধা অনুভূত হয় (যেমন- সহজে হাঁপিয়ে যাওয়া ও বুকে ব্যথা অনুভূত হওয়া) তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। যাদের বয়স ৪০ বা তারও বেশি, তাদের সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই বছরে একবার প্রেসার, ব্লাডসুগার এবং রক্তের কোলেস্টেরল ও হার্টের অবস্থা চেকআপ করে নেবেন। কর্মদক্ষতা ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এসব চেকআপ সর্বোত্তমভাবে সাহায্য করবে। এছাড়া যারা হদরোগে ভুগছেন তাদের হার্টের বর্তমান অবস্থা নির্ণয় ও জটিলতা নিরূপণে EC, Echo-cardiogram, রক্তের Lipid profile এবং ক্ষেত্র বিশেষে ETT করার প্রয়োজন হতে পারে।

ডা. এম শমশের আলী, (কার্ডিওলজিস্ট),

সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর