কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় গত দু’বছরে প্রতিবারই অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। তথ্য জানার অধিকার আইনে একটি আবেদনের জবাবে এই তথ্য জানাল ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৫ এবং ২০১৬ এই দু’বছরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের মোট ২৩ জন নিরাপত্তাকর্মী শহিদ হয়েছেন।
২০১৫ সালে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ৪০৫ বার অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। ২০১৬ সালে তা ৪৪৯–এ পৌঁছেছে। যার জেরে গত দু’বছরে ২৩ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। বিনা প্ররোচনায় নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায় লাগাতার গুলি বর্ষণ করছে পাকিস্তানি সেনারা।
এই প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিডি বক্সী জানিয়েছেন, ‘মুখে যতই শান্তি স্থাপনের কথা বলুক না কেন, গোপনে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে পাকিস্তান। শান্তি স্থাপনে একেবারেই বিশ্বাস নেই তাদের। জম্মু–কাশ্মীরে তাদের কাজকর্মের ওপর নজর রাখলেই তা পরিষ্কার বোঝা যায়।’
২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জম্মু–কাশ্মীরে ১,১৪২টি সন্ত্রাস হামলা হয়েছে। যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৬ জন নিরাপত্তাকর্মী। মৃত্যু হয়েছে ৯০ জন স্থানীয় বাসিন্দার। পাল্টা জবাব দিয়ে ৫০৭ জঙ্গিকে খতম করেছে ভারতীয় সেনারা। এর মধ্যে ২০১২ সালেই ২২০টি হামলা হামলার সাক্ষী থেকেছিল উপত্যকা। যাতে ১৫ সেনাকর্মীর মৃত্যু হয়। প্রাণ হারান এক ডজন স্থানীয় বাসিন্দাও। পাল্টা জবাবে ৭২ জঙ্গিকে খতম করে সেনা।
২০১৩ সালে ১৭০টি হামলায় ৫৩ নিরাপত্তাকর্মী এবং ১৫ জন এলাকাবাসীর মৃত্যু হয়। সেবার ৬৭ জঙ্গিকে খতম করে সেনারা। ২০১৪ সালে ১১০টি হামলা ঘটিয়েছিল জঙ্গিরা। তাতে ৪৭ জন নিরাপত্তাকর্মী এবং ২৮ সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারান।
২০১৫ সালে ২০৮টি হামলার সাক্ষী থেকেছিল কাশ্মীরবাসী। ৩৯ জন নিরাপত্তাকর্মী এবং ১৭ জন স্থানীয় মানুষের মৃত্যু হয়। ৩২২টি জঙ্গি হামলায় ২০১৬ সালে ৮২ জন নিরাপত্তাকর্মী এবং ১৫ স্থানীয় মানুষের মৃত্যু হয়।
তবে কাশ্মীরে রক্তপাতের জন্য স্থানীয় মানুষকে দুষেছেন জেনারেল বক্সী। তিনি বলেন, জঙ্গিদের খোঁজে সেনা কোনও এলাকা দখল করলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই খবর চাউর করে দেন কাশ্মীরবাসী। জঙ্গিদেরর আড়াল করতে জড়ো হন এলাকাবাসী। এতে অভিযান তো বাধাপ্রাপ্ত হয়ই, জঙ্গিরাও হাতফস্কে বেরিয়ে যায়।
বিডি-প্রতিদিন/ ৭ মে, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-২৫