ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের শক্তিশালী ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কমান্ডার হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর অনুসারে, তার সঙ্গে আরও একজন শীর্ষ আইআরজিসি কর্মকর্তা এবং দুইজন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ইরানের অন্যতম ক্ষমতাধর সামরিক সংস্থা, যারা দেশের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ চলাকালে এই বাহিনী দুইবার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস বলছে, ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিলেন ইরানের সামরিক সদরদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। হামলার অন্যতম টার্গেট ছিল নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্র।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভি বিস্ফোরণের ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে ধোঁয়া ও আগুন ছড়িয়ে পড়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, রাজধানী তেহরানের পূর্বাঞ্চলের পিরুজি সড়কে আইআরজিসির সদরদপ্তরে বিস্ফোরণ ও আগুন দেখা গেছে। ‘আইআরজিসি জেনারেল কমান্ড সদরদপ্তরের ভবনে আগুন ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে।’
এই হামলায় আইআরজিসি ও ইরানের পরমাণু কর্মসূচির গুরুতর ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েল সম্ভবত ইরানের সামরিক ও কৌশলগত সক্ষমতাকে সরাসরি টার্গেট করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার মাত্রা বাড়াবে।
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানের একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। সংবাদ সংস্থাটি বলেছে, ‘তেহরানের একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে হামলায় নারী ও শিশুসহ কয়েকজন শহীদ হয়েছেন।’
এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ইরান এই আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে। ইসরায়েলকে অবশ্যই এর ভয়াবহ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও জানিয়েছে, এ ধরনের আগ্রাসনের জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে, ‘এখন ফল ভোগ করার পালা।’
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল