তিন তালাক নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে শুনানির দুই দিন আগে জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘটনাচক্রে বুধবারই পশ্চিমবঙ্গের একটি সংগঠন রাজ্যের এক লাখ মুসলিম মহিলার স্বাক্ষর প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে। ভিন্ন এক মামলায় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে, মহিলাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে তিন তালাক দেওয়া যাবে না।
উত্তর প্রদেশের বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই নরেন্দ্র মোদী তিন তালাকের ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করেছেন। বুধবার তিনি বৈঠক করেছেন দেশের অন্যতম প্রধান মুসলিম সংগঠন জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের ২৫ জন প্রতিনিধির সঙ্গে। এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। প্রধানমন্ত্রী জমিয়ত প্রতিনিধিদের অনুরোধ করে বলেন, তিন তালাক নিয়ে এই বিতর্ককে যেন রাজনৈতিক রং না দেওয়া হয়। বরং এ ব্যাপারে সংস্কারের জন্য সবাইকেই দায়িত্ব নিতে হবে। এসময় জনপ্রতিনিধিরাও তিন তালাক নিয়ে মোদীর অবস্থানকে স্বাগত জানান।
পরশু থেকে সুপ্রিমকোর্টের পাঁচ সদস্যের যৌথ বেঞ্চের সামনে তিন তালাক ও বহুগামিতা নিয়ে শুনানি শুরু হবে। চলবে সাত দিন। রায় ১৮ মে। পশ্চিমবঙ্গের ‘জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি’ দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানায়, তিন তালাক ও বহুগামিতা বন্ধের জন্য রাজ্যের এক লাখ মুসলিম মহিলার স্বাক্ষর পাঠানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। এই মামলায় ‘জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি’ও এক আবেদনকারী।
তাদের মতে, মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড কিছু দিন আগে জানিয়েছিল, জোর করে তিন তালাক দিলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে বয়কট করা হবে। কিন্তু ঘোষণার পরে দেশের যে সব জায়গায় তিন তালাকের অপব্যবহার হয়েছে, সেখানে কোনও পদক্ষেপই করেনি 'পার্সোনাল ল' বোর্ড। 'পার্সোনাল ল' বোর্ডের হলফনামায় পুরুষদের আধিপত্য বজায় রেখে মহিলাদের সাংবিধানিক অধিকার খর্বের কথাই বলা হয়েছে।
সুপ্রিমকোর্টের রায় আসার আগেই বুধবার ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এক পৃথক মামলায় তিন তালাকের আড়ালে মহিলাদের অধিকার খর্বের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। পণ নিয়ে অত্যাচার ও পরে তালাক দেওয়া হয়েছিল এক মহিলাকে। তিনি মামলা করেন আদালতে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, 'পার্সোনাল ল'র আড়ালে মহিলাদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না।
বিডি প্রতিদিন/ ১০ মে ২০১৭/আরাফাত