কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগ তুলে রিনা খাতুন (৩০) নামের এক নারীকে গাছে বেঁধে মারধর ও মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৯ জুন) রাত ৮টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই নারীর নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে তিনি কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিকেলে প্রতিবেশী রিপন আলীর বাড়িতে ঢুকে রিনা খাতুন ফ্রিজ থেকে মাংস চুরি করেন—এ অভিযোগে রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এরপর বাড়ির উঠানে গাছে বেঁধে মারধর করেন। পরে রাত ৮টার দিকে শতাধিক লোকজন রিনার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং তাকে আবার রিপনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করে মাথার চুল কেটে দেয়।
নির্যাতিত রিনা খাতুন অভিযোগ করেন, "আমি রিপনকে ডাকতে গিয়েছিলাম। তখন মুক্তি খাতুন মাংস চুরির অপবাদ দিয়ে আমাকে বেঁধে রাখেন। এরপর রাতে গ্রামের লোকজন বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাকে গাছে বেঁধে মারধর করে। তারা বাড়িতে ভাঙচুর ও গরু, ছাগল, স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়ে গেছে।"
ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, শতাধিক মানুষ রিনাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ও কেউ কেউ তার মাথার ওড়না সরিয়ে দিচ্ছে। রিপন জানান, রিনা চুরি করতে গিয়েছিলেন এবং গ্রামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে এমন কাজ করেছে। তবে চুল কাটার বিষয়ে নিজেকে দায়মুক্ত রাখেন তিনি। মুক্তি খাতুন স্বীকার করেন, দড়ি দিয়ে বেঁধে একাধিক চর মারেন। কাশেম নামে এক ব্যক্তি জানান, "সালিশে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তার গরু, ছাগল নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।"
তবে ইউপি সদস্য মো. শাহ আলম জানান, তিনি শুধু রিনাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছেন, গরু-ছাগল নেয়ার ব্যাপারে কিছু জানেন না।
কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলাইমান শেখ বলেন, "চুরির অভিযোগে এক নারীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বিডি প্রতিদিন/আশিক