কয়েক মাসের আলাপ-আলোচনার পর ব্রেক্সিট চুক্তির একটি খসড়ায় সম্মত হয়েছে ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে গরীব হবে ব্রিটেন। সরকারি এক বিশ্লেষণে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যে কোনোভাবেই ব্রেক্সিট চুক্তি করা হোক না কেন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে ব্রিটেন।
ব্রিটেন সরকারের নিজস্ব গবেষণা প্রতিবেদনে সেই আশঙ্কার চিত্র উঠে এল। বুধবার ব্রিটেনের অর্থ মন্ত্রণালয় (ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে চুক্তির ভিত্তিতেই ব্রেক্সিট কার্যকর হোক না কেন, বিচ্ছেদের ফলে ব্রিটেন তুলনামূলক গরিব হয়ে পড়বে।
এদিকে ব্রেক্সিটের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-কে এ কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোন ধরনের চুক্তির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উদ্বিগ্ন সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে তিনি কোন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির কথা উল্লেখ করছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে যেভাবে ব্রেক্সিট চুক্তির পরিকল্পনা করছেন তা বাস্তবায়িত হলে ১৫ বছর পর ব্রিটেনের জিডিপি ৩ দশমিক ৯ ভাগ কমে যাবে। কিন্তু ব্রেক্সিট না হলেও ক্ষতির মুখে পড়বে ব্রিটেন। চ্যান্সেলর তথা অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেছেন, ব্রেক্সিট কেবল অর্থনীতির ওপরই প্রভাব ফেলবে না, রাজনৈতিকভাবেও কেউ লাভবান এবং কেউ ক্ষতির শিকার হবেন।
কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হতে পারে কর্মকর্তারা সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৩ দশমিক ৯ ভাগ জিডিপি হিসাব করলে বছরে ১০০ বিলিয়ন পাউন্ড হয়। ৮৩ পৃষ্ঠার নথিতে থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার কথা। থেরেসা মের সম্পাদিত বিচ্ছেদ চুক্তি অনুযায়ী ২৯ মার্চের পর থেকেই ব্রিটেন বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ইচ্ছামাফিক বাণিজ্য চুক্তি করতে পারবে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সময় শেষ হওয়ার পর এসব চুক্তির বাস্তবায়ন করতে হবে। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার মেয়াদ শেষ হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সময় বাড়তেও পারে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন