দক্ষিণ কলকাতার কসবায় ‘সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ’-এর ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরজুড়ে। ঘটনাটিকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ছাত্র রাজনীতি এবং নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ইতোমধ্যে কসবা থানা পুলিশ এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এবং অপর দুইজন বর্তমান শিক্ষার্থী।
২৪ বছর বয়সী ভুক্তভোগী তরুণী কসবা থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানান, কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত আবেদনপত্র জমা দিতে গিয়ে বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে ক্যাম্পাসে যান তিনি। সন্ধ্যার দিকে প্রধান অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র কলেজের প্রধান ফটক বন্ধ করার নির্দেশ দেন এবং তাকে নিরাপত্তারক্ষীদের কক্ষে নিয়ে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযুক্তদের মধ্যে মনোজিৎ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা প্রত্যাখ্যান করলে প্রতিশোধ হিসেবে এই নৃশংসতা চালান।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তালবাগান ক্রসিং এলাকা থেকে মনোজিৎ মিশ্র (৩১) ও তার সহযোগী জাহিব আহমেদ (১৯) কে গ্রেপ্তার করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাওড়ার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তৃতীয় অভিযুক্ত প্রতিম মুখোপাধ্যায়কে (২০)। তিনজনের মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মনোজিৎ মিশ্র তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দক্ষিণ কলকাতা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, নির্যাতনের সময় তাকে বিবস্ত্র করে হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করা হয় এবং তার প্রেমিক ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার তিন অভিযুক্তকে আলিপুর আদালতে হাজির করা হলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাদের আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা ইতোমধ্যে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে সম্পন্ন হয়েছে। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী আজম খান দাবি করেছেন, “ছাত্র রাজনীতির দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে মনোজিৎ মিশ্রকে ফাঁসানো হয়েছে।”
বিডি প্রতিদিন/হিমেল