বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছিল বেশ কয়েকমাস আগে। অতিথিদের তালিকাও ছিল যথেষ্ট লম্বা। কিন্তু বিয়ের দিন যতই এগিয়ে আসতে থাকে, ততই তুষারে ঢেকে যেতে শুরু করল চতুর্দিক। তা দেখে অতিথিরা অনেকেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করলেন। কিন্তু বরযাত্রীরা ঘটালেন অবাক কাণ্ড। ৬ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে বিয়ের আসরে পৌঁছলেন তারা। ভারতের উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে।
ত্রিইয়ুগিনারায়ণ গ্রাম থেকে প্রায় ৮০ জন বরযাত্রী রওনা দিয়েছিলেন বিয়ের আসরের উদ্দেশে। হঠাৎই তুষারপাত শুরু হয়। আটকে পড়ে গাড়ি। কিন্তু সময়ের মধ্যে বিয়ের আসরে পৌঁছাতে না পারলে অনুষ্ঠানই যে পণ্ড হয়ে যাবে! তাই বাধ্য হয়ে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে স্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেন হবু বর। বরযাত্রীর দলে ছিলেন পাত্রের মামা, বোনসহ মাত্র ২৫ জন।
বরযাত্রীর দলে ছিল বেশ কয়েকজন খুদেও। পাত্রের পিছু পিছু গাড়ি থেকে নেমে বাধ্য হয়ে হাঁটতে শুরু করে তারাও। তাতে যদিও কিছুই আসে যায় না শিশুদের। বরং বরফের মাঝে হাঁটতে বেশ আনন্দই পায় তারা। দিব্যি খেলা করতে করতেই গন্তব্যে পৌঁছায় শিশুরা।
বরের ভাই আশিষ গায়রোলা বলেন, ২০০২ সালেও আমরা এমনই একটি বরযাত্রীর দল দেখেছিলাম। তারাও বরফের মাঝখান দিয়ে হেঁটে হেঁটেই পৌঁছেছিলেন কনের বাড়িতে। নিজের ভাইয়ের বিয়েতে যে এই ঘটনা ঘটবে, তা ভাবিনি। তবে শুধু আমাদের নয়, স্থানীয়দের কাছেও এই বিয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ছবি দেখলেই বুঝতে পারবেন, ছোটরা এভাবে যাওয়ার সিদ্ধান্তে কতটা খুশি হয়েছে।
বরের গাড়ি তুষারপাতে আটকে পড়েছে শুনে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন ত্রিইয়ুগিনারায়ণ গ্রামের প্রধান বিজয় লাল।
তিনি বলেন, ৬ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে আসার পরে বিয়ের আচার, অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। এমন অভিনব বিয়ে অবাক করেছে রুদ্রপ্রয়াগের জেলা শাসক মঙ্গেশ ঘিলদিলওয়ালকেও। তুষার সরিয়ে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/২৮ জানুয়ারি ২০১৯/আরাফাত