টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট ২৫ বছর পর পাকিস্তানে তাদের কার্যক্রম বন্ধ দিচ্ছে। কর্মী সংখ্যা কমানোর বৈশ্বিক কৌশলের অংশ হিসেবে সংস্থাটি পাকিস্তানে তাদের কার্যক্রম গুঁটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মাইক্রোসফট পাকিস্তানের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা কান্ট্রি ম্যানেজার জাওয়াদ রেহমান সরকারের লিঙ্কডইনের পোস্টের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। মাইক্রোসফট পাকিস্তানের সাবেক প্রধান জওয়াদ রহমান লিঙ্কডইনে সেই পোস্টে জানান, প্রতিষ্ঠানটি “পাকিস্তানে অফিসিয়ালি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করছে”।
মাইক্রোসফটের মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা আমাদের গ্রাহকদের শক্তিশালী ও বিস্তৃত পার্টনার নেটওয়ার্ক এবং কাছাকাছি অবস্থিত মাইক্রোসফট অফিসের মাধ্যমে সেবা প্রদান করব। বিশ্বের অনেক দেশে আমরা এই মডেল সফলভাবে অনুসরণ করছি।”
এছাড়া মাইক্রোসফট সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ছাঁটাই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজার কর্মীর মধ্যে প্রায় চার শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করবে। মে মাসেও প্রায় ৬ হাজার কর্মীকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
পাকিস্তানের আইটি ও টেলিকম মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়- বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো অন-প্রিমাইজ সফটওয়্যার থেকে ক্লাউডভিত্তিক সফটওয়্যার-অ্যাজ-আ-সার্ভিস (এসএএএস) মডেলে রূপান্তরিত হচ্ছে। মাইক্রোসফটের সিদ্ধান্ত এই পরিবর্তনেরই প্রতিফলন।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক হাবিবুল্লাহ খান জানান, আগে সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো গ্রাহকের অবকাঠামোতে সফটওয়্যার স্থাপন করে এককালীন লাইসেন্স বিক্রির মাধ্যমে আয় করত, যা ব্যয়বহুল। কিন্তু এসএএএস মডেলে কোম্পানি ক্লাউডের মাধ্যমে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক আয় করে, ফলে অন-গ্রাউন্ড উপস্থিতির প্রয়োজন পড়ে না।
আইটি মন্ত্রণালয় বলেছে, মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্তকে পাকিস্তান থেকে প্রস্থান হিসেবে দেখা উচিত নয়; বরং এটি একটি “পার্টনার-নির্ভর, ক্লাউড-ভিত্তিক পরিষেবা মডেলে” রূপান্তর।
বিশ্লেষক খান বলেন, মাইক্রোসফটের এই পদক্ষেপ অন্যান্য বহুজাতিক কোম্পানির মতো পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়া নয়, বরং তাদের এসএএএস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক মডেলের দিকে অগ্রসর হওয়ার অংশ, যা পাকিস্তানের প্রযুক্তি খাতের মান বা অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে না।
তথ্য সূত্র : ডন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ