পাহাড় কেটে রাস্তা, নদীর উপরে কালভার্ট, অন্তত ১৬টি সেনা ছাউনির ছবি আগেই ধরা পড়েছিল উপগ্রহ চিত্রে। ভারত-চীন সেনা কমান্ডার পর্যারে তৃতীয় বৈঠকের পরেও গালওয়ান উপত্যকা থেকে তাদের পরিকাঠামো সরিয়ে নেওয়ার কোনও লক্ষণই দেখাচ্ছে না চীন।
বরং ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর, চীন নির্মাণকাজ বাড়িয়েই চলেছে। এখন গালওয়ান নদীর তীরে অন্তত ১৯টি শিবির তৈরি করেছে তারা। পিচের রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে।
গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-এর কাছে চীনা সেনার তাঁবু তৈরি নিয়েই সংঘর্ষ হয়েছিল দু’দেশের সেনার। তার পরেও ওই এলাকা-সহ গালওয়ানে তাঁবু, রাস্তা তৈরির কাজ থামায়নি চীনা সেনা।
সেনা সূত্রের দাবি, গালওয়ান নদীর বাঁকে যে-এলাকায় চীনা শিবিরগুলি তৈরি হয়েছে, তার কৌশলগত তাৎপর্য অনেক। কারণ তা থেকে গালওয়ান নদীর তীরে ভারতীয় সেনা শিবিরের উপরে সরাসরি নজর রাখা যায়। ওই এলাকায়, বস্তুত পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-এর কাছেই গালওয়ান নদী শাইয়োক নদীতে মিশেছে।
ভারতীয় সেনা সূত্রের মতে, ওই এলাকায় বরাবরই টহল দিত তারা। কিন্তু চীনা শিবিরের জন্য আর সেটা সম্ভব নয়। কারণ, এক সেনা কর্মকর্তার কথায়, ‘‘চীনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে ১৪৯ মিটার ঢুকে এসেছে।’’
সেনা সূত্রের মতে, ওই এলাকায় এখন তৈরি তাঁবু নিয়ে এসে বসাচ্ছে চীনা সেনা। গোলাপি ত্রিপলের বদলে দেখা যাচ্ছে কালো ত্রিপল। ভারতীয় সেনার চলাচলে বাধা দেওয়ার জন্য তৈরি পাথরের বাধা সরিয়ে এলাকা পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশেষ ধরনের পোশাকও ব্যবহার করছে চীনারা। ওই পোশাকের নীচের অংশ বর্ষাতির কাপড়ে তৈরি। তাতে নদীতে নেমে কাজ করতে সুবিধা হচ্ছে।
এক সেনা কর্মকর্তার কথায়, ‘‘চীনারা ওই এলাকায় স্থায়ীভাবে থাকার প্রস্তুতি চালাচ্ছে, সন্দেহ নেই। পিছু হটার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।’’
সেনা সূত্রের খবর, শ্রীনগর, জম্মুর সুঞ্জওয়ান ও দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা থেকে ক্রমাগত সেনা ও রসদ লাদাখে নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমান। মোদি সরকারও সীমান্তে পরিকাঠামো তৈরি থেকে পিছু হটবে না বলে আজ ফের ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী।
তিনি বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর, অরুণাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ও হিমাচল প্রদেশের সীমান্ত এলাকায় একাধিক সড়ক তৈরির কাজ চলছে। প্রয়োজনে রানওয়ের কাজও করতে পারে এমন ১৭টি সড়ক তৈরির কাজ চলছে। তার মধ্যে তিনটি শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ সূত্র: আনন্দবাজার।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন