২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০৩:৪৫

গরু পাচার : বিপুল সম্পত্তির হদিস পেল সিবিআই

অনলাইন ডেস্ক

গরু পাচার : বিপুল সম্পত্তির হদিস পেল সিবিআই

গরু পাচার চক্রের হোতা এনামুল হক (বাঁ দিকে) এবং সল্টলেকে বিএসএফ কর্মকর্তার সতীশ কুমারের বাড়ি সিল করছেন।

গরু পাচার চক্রে বুধবার দিনভর তল্লাশিতে উঠে আসা তথ্য দেখে বিস্মিত সিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকতারাই। তাদের দাবি, গরু পাচারের টাকায় একদিকে যেমন সতীশ কুমারের মতো বিএসএফ-কর্তা বিপুল সম্পত্তি করেছেন, তেমনই এনামুল হকের মতো পাচারকারীরা অজস্র বেনামি সংস্থা খুলে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন চালিয়ে গিয়েছেন।

প্রথম দিনের তল্লাশির পরে গরু-সোনা-মাদক পাচারের লতায়-পাতায় জড়িয়ে থাকা সম্পর্কের হদিস মিলেছে বলে তদন্তকারী সংস্থার দাবি। সেই সূত্রে একে একে এই চক্রের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তারা।

২০১৮-র শেষের দিকে সিবিআই তদন্তের ‘জেনারেল কনসেন্ট’ রাজ্য সরকার প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। ফলে গত দু’বছর সিবিআই এ রাজ্যে কোনও নতুন মামলা নথিভুক্ত করতে পারেনি। কিন্তু গত সাত দিনে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি বিশ্বভারতীয় প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা। অন্যটি গরু পাচারের মামলা।

সিবিআই কর্তারা জানিয়েছেন, কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি এক রায়ে বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-কে রাজ্য সরকারের সম্মতি নিতে হবে না। সেই সূত্রেই নতুন দু’টি মামলা করা হয়েছে।

২১ সেপ্টেম্বর গরু পাচার মামলাটি নথিভুক্ত হয়। ২২ সেপ্টেম্বর আসানসোল আদালত থেকে তল্লাশির অনুমতি নেয় সিবিআই। পরের দিন, বুধবার চলে তল্লাশি। এনামুলের কলকাতার কয়েকটি ঠিকানা, আস্তানা এবং মুর্শিদাবাদের কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়।

সিবিআইয়ের দাবি, এনামুল গরু পাচারের পাশাপাশি চাল কল, বাংলাদেশে চাল-পিয়াজ রফতানি, আবাসন ও নির্মাণ শিল্প, পাথর খাদান, বালির কারবারে যুক্ত। তার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৩০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ১০ লাখ ডলার রাখা ছিল। এছাড়া নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির হদিস মিলেছে।

সিবিআই কর্তারা জানিয়েছেন, দু’একটি অ্যাকাউন্টে এই পরিমাণ টাকা থাকলে এনামুল বাহিনীর হাতে কী পরিমাণ নগদ রয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।

অন্যদিকে, বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমারের সম্পত্তি দেখেও চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। তার সল্টলেকে একটি বাড়ি ও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া, গাজিয়াবাদে তিনটি বাড়ি, দু’টি জমির প্লট, অমৃতসরে বাগানবাড়ি, মুসৌরিতে হোটেল, রায়পুর ও শিলিগুড়িতেও জমি-বাড়ি রয়েছে। বুধবার সব জায়গাতেই সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে।

সল্টলেকের বাড়িটি তল্লাশির সময় কার্যত কোনও মালিক পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই বাড়িটি সিল করে দিয়েছে সিবিআই।

এক সিবিআই কর্তা জানিয়েছেন, সতীশ কুমারের মতো সাধারণ বিএসএফ অফিসারের সম্পত্তি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বড় মাথাদের টান মারলে কী বেরোতে পারে। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে সিবিআই।

এদিকে, গরু পাচার নিয়ে এ দিন রাজ্যের শাসক দলকে দোষ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

গরু পাচারের টাকা জঙ্গিদের হাতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে দুর্গাপুরে তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ, মাওবাদ এ সবের জন্য মমতাজি ও তার সরকার দায়ী।’-আনন্দবাজার

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর