ফ্রান্সে ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী’ হামলার পরে আবারও বিশ্বে মুসলিমদের সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। ইসলামপন্থী হামলা ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিমদের দ্বারা অপরিকল্পিতভাবে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া, আমেরিকার পরে এখন ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছে।
২০১৫ সালে চার্লি হেড্ডো পত্রিকায় মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর বিদ্রূপমূলক কার্টুন ছাপা হয়। সম্প্রতি ফ্রান্সের এক শিক্ষক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক এক ক্লাসে সেই কার্টুন দেখান। এভাবেই মুসলিমদের উস্কানি দেওয়া হয়। এর জের ধরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সাধারণ মুসলিমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন।
ফ্রান্সের হামলার পরে খ্রিস্টান প্রধান দেশগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে জোর প্রচারণা চালায়। তবে মুসলিমরা একদিন ঠিকই ইসলাম, সন্ত্রাসী গ্রুপ ও কট্টর পাদ্রীদের সামনে দাঁড়াবে। আর তারা তাদের যুক্তিগুলো তুলে ধরবে।
ফ্রান্সে স্যামুয়েল প্যাতি নামে একজন শিক্ষককে শিরশ্ছেদ করা এবং এর কয়েক দিন পরে দেশটির একটি গির্জার সামনে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল। এই হামলা দু’টি ব্যাপারে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, এটি একটি ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী হামলা’। তিনি বলেন, ইসলামপন্থীরা আমাদের ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নিতে চায়। তবে আমারা কখনো সেটি হতে দিব না।
ফান্সের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের জের ধরে তুরস্ক, ইরান ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ঘৃণ্য বক্তৃতা, উস্কানিমূলক এবং হিংসা প্রত্যাহার করতে হবে।
অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ম্যাত্রোঁর বক্তব্যের বিষয়ে বলেন, তার মানসিক চিকিৎসা করা দরকার। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও জোরালো প্রতিবাদ জানান। আর মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, অতীতের গণহত্যার জন্য মুসলিমদের রাগান্বিত হওয়ার এবং লক্ষ লক্ষ ফরাসী মানুষকে হত্যা করার অধিকার রয়েছে।
মুসলিম বিশ্বের অব্যাহত প্রতিবাদের পরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার সুর নরম করে বলেন, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর বিদ্রূপমূলক কার্টুন প্রকাশে মুসলিমদের ক্ষুব্ধ হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আমি তাদের অনুভূতি বুঝি। আমি তাদের শ্রদ্ধা করি। আমি তাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাব।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর