ইউক্রেন রাশিয়া সংঘাত বিশ্ববাসীর জন্য মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে এসেছে। গোটা বিশ্বেই তরতর করে বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম। কোথাও কোথাও সেই দাম বৃদ্ধি ছাড়িয়েছে সহ্য ও ক্রয় ক্ষমতার সীমা। জীবন বাঁচাতে তাই মানুষ বিকল্প পথে হাঁটছে। অনেককে বাধ্য হয়ে বদলে ফেলতে হচ্ছে খাদ্যাভাসও।
যদিও খাদ্য সংকটের শুরু হয়েছে আগ্রাসী ভাইরাস করোনার বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ থেকেই। এই মহামারীর ফলে বিশ্ব জুড়ে উৎপাদন খাতে স্থবিরাত নেমেছিল আগেই। গবেষণা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন বলছে, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশেও সাধারণ মানুষ খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কানাডার নাগরিকরা তাদের অর্থ ব্যয়ের ধরনে পরিবর্তন এনেছে। অর্থ বাঁচাতে মাংসসহ সব ধরনের খাদ্য গ্রহণ কমিয়েছে। জরিপে আরো দেখা যায়, ব্যয় বাড়ায় কানাডীয় সার্বিক জীবনযাত্রার মানেও পরিবর্তন আনছে।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার মতে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে কানাডার মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ১০.৩ শতাংশ। আর খাদ্য ও মুদি দোকানে পণ্যের দাম বেড়েছে ১১.৪ শতাংশ। পাউরুটি ১৪.৮, তাজা সবজি ১১.৮, দুগ্ধজাত পণ্য ৯ এবং মাংসের দাম ৭.৬ শতাংশ বেড়েছে।
স্ট্যাটিস্টার জরিপে এক হাজার ৬২২ জন প্রাপ্তবয়স্ক অংশ নেন। ৮১ শতাংশ ব্যক্তিই জানান, মুদ্রাস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছেন তারা। ৬২ শতাংশ ব্যক্তি জানিয়েছেন, দাম বাড়ায় তারা কম খাদ্য গ্রহণ করছেন। সপ্তাহের বাজারের ব্যয় কমাতে ৪২ শতাংশ মানুষ নিম্নমানের ব্র্যান্ডের পণ্য কিনছেন। ৩৫ শতাংশ মাংস, তাজা সবজি ও ফল খাওয়া কমিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির (এফএসএ) ভোক্তা জরিপে দেখা গেছে, আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় দেশটির মানুষ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেছে। তবে এ পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে মূল্যবৃদ্ধিই। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে মানুষের মূল প্রবণতা হলো তারা কম খাচ্ছে; বাড়িতেই বেশি রান্না করছে, বিশেষ অফার পেলে খাবার কিনছে এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্প খাবারের দিকে ঝোঁকা হচ্ছে। এফএসএর প্রধান নির্বাহী এমিলি মাইলস বলেন, ‘খাদ্যের দাম দিয়ে গভীর উদ্বেগ লক্ষ করেছি। আর্থিক কারণে মানুষ তাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনছে।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল
