সদ্য সমাপ্ত মার্কিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে রেকর্ড ব্যবধানে হারিয়ে বীরদর্পে হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন ঘটতে যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেবেন তিনি। এ জন্য তাকে অন্তত আরও আড়াই মাস অপেক্ষা করতে হবে। ট্রাম্পের এ বিজয়ে জাতীয়তাবাদী আমেরিকানরা খুশি হলেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের মাঝে। বিশেষ করে সবচেয়ে চিন্তিত ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো ট্রাম্প ন্যাটো থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নিতে পারেন, যা প্রায় এক শতাব্দী ধরে চলা সামরিক জোটের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ডেকে আনবে। যদিও এটি বিতর্কের বিষয়, আদৌ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নেবেন কিনা। অনেকে মনে করছেন এমন হুমকির মাধ্যমে ট্রাম্প ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সামরিক ব্যয় আরও বাড়ানোর চাপ দিতে পারেন, যাতে প্রতিরক্ষা সুরক্ষা খাতে মার্কিন ব্যয় কমে আসে।
এর আগে, ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় অভিবাসন নীতি ও যুদ্ধ বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ডোনাল্ড। এবার ক্ষমতায় আসার আগেই ন্যাটোতে মার্কিন অংশীদারত্ব ও ইউরোপ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন এ নেতা। ফলে এবারের মেয়াদে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে যাচ্ছে সামরিক জোটটি, একই সঙ্গে কঠিন বার্তা যাচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ইউক্রেনের কাছেও।
গণমাধ্যমগুলো বলছে, ট্রাম্পের এই মেয়াদে ইউরোপীয় মার্কিন মিত্রদের একতা ধরে রাখার কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। এমনকি ন্যাটোর ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা এবং নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করাকে প্রাধ্যান্য দিতে হবে। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার মূল স্লোগান ছিল ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ অর্থাৎ আমেরিকার স্বার্থ সবার আগে।
ন্যাটোর বর্তমান সদস্যসংখ্যা ৩২। ন্যাটো জোটের কার্যকারিতা নিয়ে ট্রাম্প প্রথম থেকেই সংশয়বাদী। ট্রাম্পের অভিযোগ, আমেরিকা সুরক্ষার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ইউরোপ বিনা খরচে তার সুবিধা নিচ্ছে। ট্রাম্প যদি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রকে ন্যাটো থেকে প্রত্যাহার করে নেন, তবে সেটা প্রায় এক শতাব্দী ধরে চলা ট্রান্স–আটলান্টিক প্রতিরক্ষা সম্পর্কের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে। এতে অবশ্যই বড় বিতর্ক সৃষ্টি করবে।
ট্রাম্পের অনেক মিত্র অবশ্য মনে করেন, ন্যাটো নিয়ে ট্রাম্পের এই কঠোর অবস্থান আসলে তাঁর আলোচনার একটি কৌশল। ট্রাম্প চান, ন্যাটোর প্রতিটি সদস্য নিজের ভাগের প্রতিরক্ষা ব্যয় নিজেরাই করুক। ট্রাম্পমিত্ররা যা–ই বলুন, বাস্তবতা হচ্ছে, ট্রাম্পের জয় ন্যাটো নেতৃত্বের জন্য গুরুতর উদ্বেগের কারণ হবে। সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/শআ