চীনের তিয়ানজিন শহরে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে প্রথম যৌথ ঘোষণায় কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলার নিন্দা জানিয়েছে সদস্য দেশগুলো। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিন গতকাল প্রকাশিত এ ঘোষণা ভারতের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
পেহেলগামে হামলা নিয়ে এসসিওর সদস্য দেশগুলোর কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া এসেছে ঠিক তখন, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠিন বার্তা দিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের উপস্থিতিতেই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সম্মেলনে কড়া বার্তা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এসসিও সম্মেলনের যৌথ ঘোষণাতেও ভারতের বার্তাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ঘোষণায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘২২ এপ্রিলে পেহেলগামে সংঘটিত জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ পাশাপাশি নিহতদের পরিবার ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছে সদস্য দেশগুলো। এ বছর ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। চীনে এসসিও সম্মেলনের দেশগুলো ওই হামলার আয়োজক, অর্থদাতা এবং মদতদাতাদের ন্যায়বিচারের মুখোমুখি করার কথা উল্লেখ করেছে ঘোষণাপত্রে। সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশগুলো। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বার্তা- ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণযোগ্য নয়’ উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেশগুলো আহ্বান জানিয়েছে সীমান্ত অতিক্রমকারী সন্ত্রাসীসহ সব ধরনের সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। কূটনৈতিকভাবে এটি ভারতের জন্য বড় সাফল্য বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ মাত্র দুই মাস আগেই এসসিওর যৌথ বিবৃতিতে পেহেলগাম হামলার উল্লেখ ছিল না। সে কারণে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিবৃতিতে সই করেননি। ভারতের এ দৃঢ় অবস্থান এসসিওর ভিতরে কূটনৈতিক ভারসাম্য নাড়িয়ে দেয়। ভারত স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না। ভারতের জিরো টলারেন্স নীতির প্রতিফলনই এ সিদ্ধান্ত। চীন বর্তমানে এসসিওর সভাপতিত্বে থাকা দেশ। পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে চীন প্রথমে পেহেলগাম হামলার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তিয়ানজিন বৈঠকে সব সদস্য দেশের একযোগে সন্ত্রাসের নিন্দা পাকিস্তানের জন্য একটি কূটনৈতিক ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। এর আগে তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে ভারত, রাশিয়া ও চীনের নেতারা একসঙ্গে সৌহার্দের বার্তা দেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে হাসি, করমর্দন ও কোলাকুলি করতে দেখা গেছে। -রয়টার্স