পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় নদীতে যাত্রীবাহী বাস পড়ে যাওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বাসের চালক। তবে উদ্ধার কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা যায়, সোমবার সকাল ছয়টা নাগাদ জেলার দৌলতাবাদ এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নদীয়া জেলার করিমপুর থেকে মালদা যাওয়ার সময় উত্তর বঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার ওই যাত্রীবাহি বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালিঘাট সেতুর রেলিং ভেঙে নিচে ভৈরব নদীতে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় নদীতে পড়ে যাওয়ার পরই আশপাশ থেকে নৌকা নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মাঝিরা। তারাই প্রথমে উদ্ধার কাজ শুরু করে। সকালেই দুইটি লাশ উদ্ধার করা হয় সম্ভব হয়। এরপর আরও তিনটি লাশকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু যাত্রীবাহি বাসটি প্রায় ত্রিশ ফুট নদীর পানিতে ডুবে থাকার কারণে প্রাথমিকভাবে বাসটিকে পানি থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এরপর আশপাশের এলাকা থেকে চারটি বড় ক্রেন এনে সন্ধ্যায় নদী থেকে বাসটির অর্ধেক অংশ তোলা হয়। পাশাপাশি নদীতে নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও প্রশিক্ষিত ডুবুরিকে। তারাই বাসের মধ্যে থেকে একের পর এক লাশ উদ্ধার করে। দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাসটিতে ৫৬ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিন সকালে বাসটি নদীতে পড়ে যাওয়ার পর ১০ জন যাত্রী কোনরকমে প্রাণে বেঁচে যান। তারা প্রত্যেকেই গভীর পানিতে সাঁতরে পাড়ে উঠে আসার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে।
এদিকে দুর্ঘটনার জন্য বাসটির চালকের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন হাসপাতালে চিকিৎসারত যাত্রীরা। আহতদের একজন জানিয়েছেন চালক মোবাইলে কথা বলার কারণেই অন্যমনস্ক হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং বাসটি রেলিং-এ ধাক্কা মেরে নীচে পড়ে যায়।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন সকালে কলকাতা থেকেই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার পিছু ৫ লাখ রুপি, গুরুতর আহতদের ১ লাখ ও অল্প আহতদের ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষনা দিয়েছেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দুর্ঘটাস্থলের উদ্যেশে রওনা দেন। বিকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, পরিবহন সচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়। পরে হাসপাতালে গিয়েও আহতদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিডিপ্রতিদিন/ ২৯ জানুয়ারি, ২০১৮/ ই জাহান