বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে চীনের রাষ্ট্রদূত

চায়না টাউন প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দিতে প্রস্তুত বসুন্ধরা গ্রুপ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

চায়না টাউন প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দিতে প্রস্তুত বসুন্ধরা গ্রুপ

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গতকাল ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্স পরিদর্শন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর - বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, অনেক চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তারা মিয়ানমার, কম্বোডিয়ার পরিবর্তে বাংলাদেশকেই বেছে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) এলাকায় ১০০ চীনা কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে। গতকাল ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্স পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। এ সময় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর চীনা রাষ্ট্রদূতকে প্রস্তাব দেন, চীন আগ্রহী হলে ঢাকায় চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এজন্য

জমির প্রয়োজন হলে বসুন্ধরা গ্রুপ তা দিতে প্রস্তুত। এ প্রস্তাবে সন্তোষ প্রকাশ করে লি জিমিং বলেন, বসুন্ধরার এ প্রস্তাব চীন বিবেচনা করবে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি রাস্তাকে ‘চায়না স্ট্রিট’ নামকরণেরও ঘোষণা দেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। চীনা রাষ্ট্রদূত আনন্দের সঙ্গে এ প্রস্তাবে সম্মতি দেন। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ডেইলি সানের কনফারেন্স কক্ষে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ২০০৬ সাল থেকে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশ-চীন দুই দেশ সম্পর্ক উপভোগ করছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব দিনে দিনে আরও গভীর হচ্ছে। আগামী দিনে এ সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গেও বিনিয়োগ বাড়াতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ করছি।’ এতে উভয় পক্ষই লাভবান হবে বলে প্রত্যাশা তার।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টিকে থাকবে আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক রয়েছে। শুধু সরকারি পর্যায়ে নয়, বেসরকারি পর্যায়েও ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব বাড়াতে হবে। অবশ্য বসুন্ধরা এককভাবে চীনের সঙ্গে প্রায় ২০টি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। আমরা আরও কাজ করতে চাই। আমরা চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরও গভীর হবে। বসুন্ধরার সঙ্গেও চীনের সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে। চীন আমাদের দেশে তাদের পণ্য যেমন আনবে, আমরাও আমাদের পণ্য চীনে প্রমোট করব। আমরা কেবল চীন থেকে পণ্য আমদানিই করতে চাই না, সেখানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিও করতে চাই।’ বক্তব্যের শেষে ২৫ বছর ধরে এ দেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তিনি চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান। আগামী ২৫ বছরে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধিশালী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশে একটি চীনা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় লি জিমিংয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক। এখানে চীনা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হলে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও সহজ হবে। এ প্রস্তাবে একমত পোষণ করে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে চীনা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় কোনো বাধা নেই। কীভাবে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা যায় সে বিষয়ে তিনি উদ্যোগ নেবেন বলে আশ্বাস দেন।

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউস পরিদর্শন করে উচ্ছ্বসিত হয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউসে এসে আমি আনন্দিত। এটি সত্যি বড় একটি মিডিয়া হাউস।’ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া পরিদর্শনের জন্য রাষ্ট্রদূত লি জিমিংকে ধন্যবাদ জানিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য সম্মানজনক।’

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের সম্পাদক জুয়েল মাজহার, কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল, নিউজ টোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহা প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর